নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাগলায় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ে আব্দুর রাজ্জাক (১৭) নামের এক কিশোরকে আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনায় ছয় অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় উদ্ধার করা হয় অপহৃত কিশোর আব্দুর রাজ্জাককে।
শনিবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা প্রাপ্তি সিটির ভিতর থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে সঙ্গে অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রোববার ৬ আগষ্ট অপহৃত কিশোর আব্দুর রাজ্জাকের বড় ভাই মো. সজিব বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। উদ্ধার হওয়া আব্দুর রাজ্জাক পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী থানার চর মন্তাজের মো. জলিল খলিফার ছেলে।
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীরা হলো, পটুয়াখালী জেলার গলাচিপার শহিদুলের ছেলে আরুস হাওলাদার (১৯), নাছির মৃধার ছেলে ইমন (১৮), একই জেলার রাঙ্গাবালী থানার মিলন পেয়াদার ছেলে সালমান (১৭), গলাচিপা থানার জহুরুল ডাক্তারের ছেলে জিহান (১৯), ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার কবিরের ছেলে সজীব (১৯) ও একই থানার আইয়ুব আলীর ছেলে রায়হান (১৮)। তারা সকলেই পাগলা এলাকায় বসবাস করতো।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃত আসামী সালমান তাদের পূর্ব পরিচিত এবং একই গ্রামের পাশাপাশি বাড়ি। সেই সুবাদে আলোচনা সাপেক্ষে চাকরি করার জন্য গত ১৫ দিন সালমানের এখানে আসে বাদীর ছোট ভাই কিশোর আব্দুর রাজ্জাক। পরবর্তীতে একটি প্রিন্ট কারখানায় কাজও নেয়।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে গ্রেফতারকৃত জিহান বাদীর ভাই আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবহৃত রেডমি স্মার্ট ফোনটি কথা বলার জন্য চেয়ে নেয়। তা নিয়ে বাথরুমে যায়। বাথরুম থেকে বের হয়ে বলে মোবাইল ফোনটি বাথরুমে পড়ে গিয়েছে এ জন্য সে জরিমানা বাবদ টাকা প্রদান করবে। কিন্ত মোবাইল ফোনটি জিহানের নিকটই ছিল। এ বিষয়টি বাদীর ভাই আব্দুর রাজ্জাক স্থানীয় বড় ভাইদের নিকট অবগত করে। এতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুর রাজ্জাককে মারধর করে।
পরবর্তীতে শনিবার বিকেল তিনটার দিকে গ্রেফতারকৃতরা বাদীর ভাইকে চোখ বেঁধে পাগলা নদীর পাড়ে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। রাত্র ১০টার দিকে পুনরায় প্রাপ্তি সিটির ভিতরে নিয়ে আসে।
তখন গ্রেফতারকৃত রায়হান তার মোবাইল ফোন দিয়ে বাদীর বাবার নিকট ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে অন্যথায় বাদীর ভাইকে মারধর হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করে। বাদীর বাবার টাকা দিতে দেরি হওয়াতে বাদীর ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক বাদীকে ফোন করে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে। বাদীর ভাই জীবন রক্ষার্থে তার সাথে থাকা ৪ হাজার টাকা গ্রেফতারকৃতদের হাতে তুলে দেয়।
বাদী বিষয়টি জানতে পেরে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করলে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনাস্থল নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে মুক্তিপণ চাওয়া ছয় অপহরণকারীকে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম মিয়া জানান, বিষয়টি জানতে পেরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চক্রটির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতারসহ আটকে রাখা আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।