পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত, পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ১৯:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ

  পেকুয়া প্রতিনিধি

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরি নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সোমবার কক্সবাজারের পেকুয়ার পূর্ব মেহেরনামার দুটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধের ৮০ মিটার ও ৫০ মিটার অংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে মাতামুহুরি নদীর পানি প্রবেশ করে সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা, সৈকত পাড়া, বলির পাড়া, মোরারপাড়াসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া রাজাখালীর লালজান পাড়ার স্লুইচগেট সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে ওই অঞ্চলের প্রায় দশ হাজার মানুষ।

মেহেরনামায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশগুলো দিয়ে মাতামুহুরি নদীর পানি তীব্র বেগে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সময়ের সাথে দ্রুত এ ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি পানির পরিমাণ বেড়ে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার রাস্তাঘাট, মসজিদ, ঘরবাড়ি, খামারসহ নানা অবকাঠামো তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিচে। তুলনামূলক নিম্নাঞ্চলের মানুষ তাঁদের গৃহপালিত পশুগুলো নিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণকেন্দ্রে।

পেকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, টানা বৃষ্টিতে কয়েকদিন ধরে মেহেরনামা, বিলহাসুরা, মইয়াদিয়া, সিরাদিয়া ও বলির পাড়া এলাকায় পানি বেড়ে গিয়েছিলো। এরমধ্যে আজ (সোমবার) মেহেরনামার দুটি পয়েন্টে কবেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় এক মহা দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য করতৃপক্ষকে অবহিত করেছি। পাশাপাশি এ দুর্যোগের কবলে পড়া মানুষদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

এদিকে টানা বর্ষণে উপজেলার ৬০ শতাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে। শিলখালী ইউনিয়নের হাজ্বীর ঘোনা এলাকার বেশিরভাগ মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মানুষ ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। এছাড়া এ ইউনিয়নের মুন্সিমোড়া, মাঝেরঘোনা, পেঠান মাতবর পাড়ারসহ তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। 

এব্যাপারে শিলখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোছাইন বলেন, পানিবন্দি মানুষদের ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় তীব্র খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তাঁদের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল রাজাখালী, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নেও টানা বর্ষণের প্রভাব পড়েছে। এই তিন ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষ বর্তমানে পানির নিচেই জীবন যাপন করছে। এরমধ্যে রাজাখালীর লালজান পাড়া ও উজানটিয়ার পেকুয়ার চর এলাকার অবস্থা খুবই নাজুক।
পেকুয়ারচর এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বর্ষাতেই পানির নিচে চলে যায় আমাদের এলাকা। এরমধ্যে টানা বৃষ্টি হলেই পানি বেড়ে ঘরে ঢুকে পড়ে। তখন জীবনযাপন হয়ে পড়ে দুর্বিষহ। মুলত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকাতে প্রতিবছর এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশগুলো পরিদর্শন করে এসেছি। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া মানুষদের আশ্রয়ণকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত বাসিন্দাসের পাহাড়ধসের ব্যাপারে সতর্কতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। আর এ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরি সভার আহবান করা হয়েছে।