ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সৌদি প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মরদেহ দীর্ঘ ৫২ দিন পর বাড়িতে

সৌদি প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মরদেহ দীর্ঘ ৫২ দিন পর বাড়িতে

উচ্চ শিক্ষিত হয়েও নিজ দেশে ভালো চাকুরী না পাওয়া সৌদি প্রবাসী সাতক্ষীরার হাফিজুর রহমানের মরদেহ দীর্ঘ ৫২ দিন পর দেশে ফিরলো। মরদেহ ফিরে পাওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার বিকালে বিমান বন্দর থেকে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কৃপারামপুর গ্রামে নিয়ে এলে পিতা, মাতা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

নিহতের মা রিজিয়া খাতুন ও স্ত্রী জেসমিন খাতুন জানান, বিগত ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর হাফিজুর সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে মোটা অংকের বেতনে কাজের আশ্বাসও পান। অথচ চলতি বছরের গত ১৭ জুন সৌদি আরব থেকে খবর আসে হাফিজুর মারা গেছেন। কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের কৃপারামপুর গ্রামের রোস্তম আলী সানার ছেলে হাফিজুর কলারোয়ার নন এমপিওভুক্ত ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ১৬ বছর শিক্ষকতা করে বেতন না পেয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরব।

তারা আরও জানান, নিয়তির নির্মম পরিহাস সেখানেও পাঁচ মাসে কোন কাজ না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে বাড়ি ফেরার আকুতি জানালে মানব পাচারকারী ওই চক্রটি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি বাড়ি ফেরার জন্য আরও এক লাখ দশ হাজার টাকা নিয়েছিল। তারপরও তাকে বাড়ি ফিরতে দেয়া হয়নি। পরিবারের অভিযোগ হাফিজুর ওই দালাল চক্রের অনেক কুকীর্তি জেনে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

শোকাহত পরিবারের দাবি ওই মানব পাচারকারী দালাল চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি বিভাগ ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে মরদেহ দেশে ফিরে পেয়েছে। নিহতের মা রিজিয়া খাতুন জানান, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দালালদের ফাঁসি চাই। নিহতের স্ত্রী জেসমিন খাতুন জানান, নির্মমভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে দালাল মোখলেছুর রহমান ও তার সৌদীর বস। ভালো কাজের কথা বলে সেখানে পৌছানোর পরে দেয়া হয়েছে খারাপ কাজ। দেশে ফিরে আসলে তাদের আসল চেহারা বেরিয়ে আসবে। তাই পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এঘটনায় সৌদি প্রবাসী দালাল মোখলেছুর রহমান খাঁসহ তার ভাই ও তার পিতাকে আসামি করে কলারোয়া থানায় নিহতের ভাই মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি আরও জানান, এ মামলায় ইতিমধ্যে মোখলেছ খাঁ ও তার ভাই কারাগারে রয়েছে। আর পিতা নাসির উদ্দীন খাঁ উচ্চ আদালত থেকে জামিন রয়েছে।

মরদেহ,প্রবাসী,সৌদি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত