অবসরে গিয়ে অতিরিক্ত সময় পদে থাকার জন্য অধ্যক্ষের দৌড়ঝাঁপ
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৫:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি
সরকারের পুর্বানুমোদন ছাড়া কোনক্রমেই প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না বিধান থাকলেও অধ্যক্ষ পদ থেকে অবসরে গিয়ে আবার অতিরিক্ত সময় অধ্যক্ষ থাকার জন্য দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া ডিগ্রি কলেজের মো. হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি। যে কারণে প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম করে অধ্যক্ষ পদে থাকার জন্য জোর চেষ্টা তদ্বির চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন কলেজে গিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, মো. হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। গত ৩১ জুলাই তিনি অধ্যক্ষ পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এখন পর্যন্ত তিনি ওই পদ থেকে কাজ করছেন। কিন্তু কৌশলে দাপ্তরিক কোন কাগজে স্বাক্ষর করেন না।
কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে হুমায়ুন কবির ভুঁইয়াকে পাওয়া যায়নি। শিক্ষকরা জানালেন তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছেন।
কলেজের উপাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিয়ম থাকলেও তিনি এখনো ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পাননি। তাকে দায়িত্ব দেয়াও হয়নি।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ জানান, যে কাজটি আইনগতভাবে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অনুমোদন করে না, এই কলেজে সেটাই হচ্ছে। অধ্যক্ষ অবসরে গেলে উপাধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হবেন। সেটা পরিচালনা পর্ষদ মিটিং করে করবে। কিন্তু তা না করে অধ্যক্ষকে দায়িত্বে রেখেই অতিরিক্ত দায়িত্বের জন্য জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন। তাও আবার পরিচালনা পর্ষদের মিটিং না করে কাগজে কলমে মিটিং দেখিয়ে তা করেছেন। আমি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে থাকলেও কথা বলার সুযোগ থাকে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একজন শিক্ষক জানান, মো. হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে অনেক শিক্ষকের সাথে নিয়মের বাহিরে গিয়ে কাজ করেছেন। ওইসব ঘটনায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও আছে। তিনি দলীয় প্রভাব বিস্তার করে আবারও দায়িত্বে থাকতে চান। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাউকে দায়িত্বও দেননি। যা কোনভাবেই মাউশি ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়মে নেই।
ওই শিক্ষক আরো জানান, হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব শেষ হওয়ার দুই মাস পূর্বেই অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকার জন্য জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন। যা কোন নিয়মের মধ্যেই পড়ে না।
মো. হুমায়ুন কবির ভুঁইয়াকে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হয়- আপনি কি মো. হুমায়ুন কবির। তিনি উত্তের হ্যাঁ বলেন। আপনি কি সূচীপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি হ্যাঁ বলেন। যখনই বলা হয় আপনিত ৩১ জুলাই অবসরে গিয়েছেন, তখন তিনি কথা পাল্টিয়ে বলেন আমিত এখন দায়িত্বে নেই। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে একজনকে চার্জ দিয়ে এসেছি। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বের জন্য আবেদন করেছি। অনুমোদন হলে আবার আসব।
কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মজুমদার জানান, হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া অবসরে গেছেন সঠিক। তাকে অতিরিক্ত সময়ের জন্য রাখতে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অনুমোদন চেয়েছি। অনুমোদন হলে তিনি থাকবেন। না হয়ে উনাকে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে রাখব। স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে প্রভাব এসব বিষয়গুলো তার প্রতিপক্ষরা বলে। নিয়মের বাহিরে এই প্রতিষ্ঠানে কিছুই হবে না। পরিচালনা পর্ষদের সবার মতামত নিয়ে কাজ করা হবে।