কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৯৯৯-এর ফোন কলে একটি অপহরণের সূত্র ধরে কিশোর অটোরিকশা চালক শিমুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সোমবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল- মুন্সিরহাট ইউনিয়নের পেছাইমুড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে সায়মন (১৬), পৌর এলাকার শ্রীপুর পশ্চিম পাড়ার হারুন অর রশিদের ছেলে আবদুল মান্নান (২৪), একই গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. বাপ্পি (১৪), রামরায়গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মো. রবিন (২২) ও আলমগীর হোসেনের ছেলে সৈকত (১৬)।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।
তিনি জানান, গত ১২ আগস্ট কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার দোয়েল চত্বর নামকস্থানে মোহন মিয়ার ১২ বছর বয়সী ছেলে জুয়েলকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপহরণ করে আটকে রাখে। বিষয়টি মোহন মিয়া জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে অবগত করেন। কিশোর জুয়েলকে উদ্ধার করতে অভিযান চালিয়ে রবিন নামে কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্যকে আটক করা হয়। এসময় অপর সহযোগিদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের চক্ষুর আড়ালে গ্রেপ্তারকৃত রবিন গুনগুন করে তার অপর সহযোগি আটককৃত সায়মনকে বলে, ওই বিষয় নিয়ে পুলিশের কাছে মুখ খোলা যাবে না। বিষয়টি অভিযান পরিচালিত সহকারী উপ-পরিদর্শক জহির উদ্দিন আমাকে অবগত করলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেপ্তারকৃত সকলকে থানায় নিয়ে আসি।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা আরও জানান, কি বিষয়ে পুলিশের সামনে মুখ খোলা যাবে না-সায়মনকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে কিশোর অটোরিকশা চালক শিমুল হত্যার বিষয়। তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তারকৃত রবিনকে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশের কাছে স্বীকার করে অটোরিকশা চালক শিমুলকে তার অপর সহযোগিরা সহ হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ডোবায় ফেলে দেয়।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ জুন মহাসড়কের হায়দারপুল নামকস্থানে একটি ডোবা থেকে কিশোর অটোরিকশা চালক শিমুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা সুমন মিয়া বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ক্লু-লেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। অপহরণের সূত্র ধরে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা স্বীকার করে, তারা কিশোর অটোরিকশা চালক শিমুলকে হত্যা করেছে।
কিশোর গ্যাং সদস্যরা জানায়, শিমুল তাদের পূর্ব পরিচিত। ভাড়ার কথা বলে গত ২২ জুন তাকে চৌদ্দগ্রাম বাজার থেকে নিয়ে যাওয়া যায়। সন্ধ্যার পর তার অটোরিকশাটি ছিনতাই করার চেষ্টাকরা হলে শিমুল বাধা দেয়। বিষয়টি জনসম্যুখে প্রকাশ করবে বলে হুমকি দিলে রবিন তার পেন্টের পকেট থেকে একটি বেল্ট বের করে শিমুলের গলা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ডোবায় ফেলে দেয়।