কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মূর্তিমান আতঙ্ক রাসেল বাহিনীর প্রধান শেখ রাসেল সহ সাতজনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ সদস্যরা।
মঙ্গলবার(১৫ আগস্ট) রাতে থাইংখালীর বটতলী এলাকার গহীন পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো উখিয়ার থাইংখালী এলাকার মৃত শেখ হাবিবুর রহমানের ছেলে শেখ রাসেল প্রকাশ ডাকাত রাসেল(৩২), ঘোনারপাড়া এলাকার আব্দু শরিফের ছেলে নুরুল হাকিম(৪০),টেকনাফ রঙ্গীখালী দুদু মিয়ার ছেলে মো. ছলিম(৩৮), কবির আহমদের ছেলে নুরুল আমিন(৪২),নুরুল আমিনের ছেলে কায়সার উদ্দিন(২০), রঙ্গীখালী লামারপাড়া এলাকার মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. সাদেক হোসেন(৩০) ও টেকনাফ কাঞ্জরপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে সাহাব উদ্দিন(২৫)। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ অধিনায়ক(ভারপ্রাপ্ত) মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক। তিনি বলেন," গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থাইংখালী এলাকার সাধারণ মানুষের মূর্তিমান আতঙ্ক ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসার খবরে গহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে রাসেল বাহিনীর প্রধান রাসেল ও তার অপর সহযোগী ছয়জনসহ সাতজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬টি দেশীয় তৈরী একনলা বড় বন্দুক,২টি এলজি, ১২রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ, ৭ রাউন্ড রাইফেলের তাজা কার্তুজ,১রাউন্ড খালি কার্তুজ,১টি রামদা, ২০হাজার পিস ইয়াবা এবং ৪টি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।"
র্যাব জানায়,"গ্রেফতারকৃত চক্র সদস্যদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাত দলটি উখিয়ার তেলখোলা বটতলী ও টেকনাফের রঙ্গীখালী গহীন পাহাড়ী এলাকায় আস্তানা গড়ে তুলে এবং সেখান থেকে মূলহোতা ডাকাত রাসেলের নেতৃত্বে খুন,অপহরণ, ডাকাতি ও দস্যুতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে উখিয়ার থাইংখালী বনের বিভিন্ন স্পটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে বহু মামলার আসামী চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ডাকাত রাসেল। সে তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এবং ডাকাত রাসেল নামে খ্যাত। গ্রেফতারকৃত ডাকাত রাসেলের সাথে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ছত্র-ছায়ায় সে নানা অপরাধ অপকর্ম করে থাকে। তার নেতৃত্বে রাসেল বাহিনী নানাবিধ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘঠিত করতো। এমনকি একাধিকবার বিজিবি, পুলিশ এবং বনবিভাগের ফোর্সদের উপর সশস্ত্র হামলা করেছে।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে না এসে অবৈধ বালু ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, খুনসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নারীদের অপহরণসহ ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ ডাকাত রাসেল বিরুদ্ধে রয়েছে। ডাকাতি, অপহরণ, মাদক, মারামারি, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১৫টির অধিক মামলা রয়েছে এবং সে একাধিক মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী বলে জানা যায়।"
উল্লেখ্য, গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউএনও উখিয়া ও বনবিভাগের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তার কয়েকটি আস্তানার একটি আস্তানা হইতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেন। গ্রেফতারকৃত মো. ছলিমের বিরুদ্ধে ৩টি, নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ৫টি, সাদেক হোসেনের বিরুদ্ধে ৬টি, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩টি এবং নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে ৩টির অধিক মামলা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়।
গ্রেফতার কৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের পক্রিয়া চলছে।