সামান্য একটি পলিথিন কাগজ ছিড়ে ফেলেছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা জোসনা রায়। আর এ কারণেই ছেলের উপস্থিতিতে তার স্ত্রী রেখা রায় বৃদ্ধা জোসনা রায়কে ঘর থেকে বের করে দেয়ার জন্য ধাক্কা মেরে বাহিরে ফেলে দিয়েছে। ১৫ আগস্ট রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পরার পর সর্বমহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।
ভিডিওর সূত্রধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের কালুরপাড় গ্রামের। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা ওই বাড়িতে আসলে মৃত তরনী কুমার রায়ের ছেলে তপন রায় এবং তার স্ত্রী নির্যাতনকারী রেখা রায় দুইজনেই আত্মগোপন করেন। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে এসে বৃদ্ধা শাশুড়িকে নির্যাতনকারী পুত্রবধূ রেখা রায় বলেন, ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে ১৫ আগস্ট বিকেল তিনটার দিকে বৃদ্ধা মা জোসনা রায়কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বৃদ্ধার ছেলে তপন রায় বলেন, ধাক্কা নয়, হাত ধরে সরিয়ে দেওয়ার সময় আমার মা পরে গেছেন। তবে ছেলে তপন রায়ের উপস্থিতিতে তার স্ত্রী রেখা রায়ের নির্মম আঘাত সহ্য করেও মুখ খুলতে রাজি নন বৃদ্ধা জোসনা রায়। শুধু বলেন, আমার ছেলে গরীব ওর যেন কোন ক্ষতি হয়না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিউর রহমান জানিয়েছেন, ফেসবুকের মাধ্যমে শাশুড়িকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে (তদন্ত) অবহিত করার পর তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যেন আর কোন বৃদ্ধা বাবা ও মাকে এধরনের নির্যাতনের স্বীকার হতে না হয়, সেজন্য এলাকাবাসী তপন রায়ের উপস্থিতিতে তার বৃদ্ধা মা জোসনা রায়কে নির্যাতন করায় তপন ও তার স্ত্রী রেখা রায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে নির্যাতিতা বৃদ্ধা জোসনা রায়, নির্যাতনকারী ছেলে তপন রায় ও তার স্ত্রী রেখা রানীসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়েছিলো। পরবর্তীতে সেখানে বৃদ্ধা মা তার ছেলে ও পুত্রবধুর সাথে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। নির্যাতনকারী ছেলে ও পুত্রবধু নিজেদের দোষ স্বীকার করে তাদের মা ও বড় ভাইয়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। নির্বাহী অফিসার আরও বলেন, গর্হিত কাজের জন্য ছেলে ও তার পুত্রবধুকে ভর্ৎসনা করে প্রাথমিকভাবে ক্ষমা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে বৃদ্ধা মাকে তার ছেলে ও পুত্রবধূর সাথে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।