কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে বন বিভাগের নব রূপে সবুজায়ন
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ১৭:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
পাহাড় হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস, এটিকে সতেজ রাখার জন্য সামাজিক বনায়নের মাধ্যমেই সম্ভব। দেশে বৃক্ষ সম্পদ বৃদ্ধি ও পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান প্রতি বছরের ন্যায় বনকর্মকর্তা এবং কর্মীদের বিরতিহীন পরিশ্রমে লালমাই পাহাড়ে নব রূপে সবুজায়ন হচ্ছে। এর ফলে একদিকে জনসচেতনতা তৈরি হচ্ছে অন্যদিকে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গাছ লাগিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছে। সবুজের সমারোহ হয়ে ডানা মেলেছে রোপিত গাছের পাতা। এতে শুধু যে জনগণের ভাগ্যই পরিবর্তিত হচ্ছে তা নয়, দেশের পরিবেশ উন্নয়নেও এ বৃক্ষরাজি বিরাট ভূমিকা রাখছে বলে জানা গেছে।
বৃক্ষরোপণ ও বনায়নে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য সামাজিক বনায়ন সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ। এদিকে বনভূমির ভারসাম্য রক্ষায় সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের বড় ধর্মপুর মৌজায় সবুজায়নে ভরে উঠেছে।
জানা গেছে, কুমিল্লা বিভাগের কোটবাড়ী রেঞ্জ অফিসের অধিনে ২০২১-২০২২ সালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ বিট বড় র্ধমপুর মৌজার ১৫টি দাগে জবর দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করে ২৫ হেক্টর পাহাড়ি ভূমিতে বাগান সৃজন করা হয়।
এছাড়াও জেলার লাকসাম ও নাঙ্গলকোট এসএফপিসি’র আওতায় উপজেলায় ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক বনায়ন করা হয়।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগ কোটবাড়ী রেঞ্জ অফিসের অধিনে ২০২২-২০২৩ সালে সদর বিট বড় র্ধমপুর মৌজার ৯টি দাগে জবর দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করে সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরওয়ারের সহযোগিতায় এলাকার জনগণের সম্পৃক্ততায় ২০ হেক্টর পাহাড়ি ভূমিতে বাগান সৃজন করা হয়।
এছাড়াও চলতি বছরে বড় ধর্মপুর মৌজায় আরো ১৮টি দাগে ২০ হেক্টর ভূমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ভূমিতে ২০২৩-২০২৪ইং অর্থ বছরে বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছ।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুমিল্লা কোটবাড়ী রেঞ্জ অফিসের সদর বিটের অধিনে সদর দক্ষিণ উপজেলা লালমাই পাহাড় সবুজ বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ হ্রাস, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকার উৎস হিসেবে বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, কোটবাড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন খন্দকার ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাকর্মচারীগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের সবুজায়নের ফলে বিলুপ্ত বন্যপ্রানী ও বিভিন্ন প্রজাতির পশু পাখির অবাধ বিচরণের ব্যবস্থা হয় এবং প্রশাসন ও বন বিভাগের কঠোরতায় পশু-পাখি শিকার বন্ধ হয়েছে।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের এ উদ্যোগকে বনপ্রেমি ও সাধারণ মানুষ প্রশংসা করেছেন।
কুমিল্লা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন খন্দকার বলেন, টেকসই বন ও দরিদ্র জনগণকে উপকারভোগী হিসেবে সম্পৃক্ত করে পরিচালিত সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমে সুফল পাচ্ছে উপকারভোগীরা। সামাজিক বনায়নের ফলে অংশীদার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ভূমিহীন, দরিদ্র, বিধবা ও দুর্দশাগ্রস্থ গ্রামীণ জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে।