রংপুর অঞ্চলে ৪ শতাধিক লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ১৮:১৬ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুর অঞ্চলে ৪ শতাধিক লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এতে করে প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানিসহ দুর্ঘটনা। এসব লেভেল ক্রসিং এ গেইটম্যান দেয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানে তারা কোন কর্ণপাত করেননি। এতে পথচারীসহ সাধারণ মানুষজন সবসময় আতঙ্কে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল লালমনিরহাট বিভাগের অধীনে আট জেলায় ৪ শতাধিক লেভেল ক্রসিং অধিকাংশই অরক্ষিত এবং অবৈধ। ওইসব রেল ক্রসিংয়ের কোথাও কোথাও সাবধান সাইবোর্ড লাগিয়ে সচেতনতার সৃষ্টি করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গেইটম্যান না থাকাসহ অরক্ষিত অবস্থায় থাকার কারণে প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানিসহ দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এতে পথচারিসহ মানুষজন আতংকিত রয়েছেন।

এদিকে গত শুক্রবার ও শনিবার রংপুর  এবং  নীলফামারীতে রেল ক্রসিংয়ে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একজন অটো চালক ও অন্যজন সরকারি কর্মকর্তা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের তকিপল বাজার এলাকার রেলগেটে বুড়িমারিগামি ট্রেনে কাটা পড়ে মাহবুর রহমান নামের এক অটোরিকশাচালক মারা গেছেন। তার বাড়ি উপজেলার খোপাতি এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। এর আগে রাতেই তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভোররাতে তিনি মারা যান।

এর আগে পরে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় নীলফামারী সদর উপজেলার দেবীর ডাঙ্গা সড়কের রেলক্রসিং এলাকায় বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে জেলা সহকারী তথ্য কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্রের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার হাড়োয়া এলাকার মোহন বর্মনের ছেলে। অরক্ষিত রেলগেটে  এ দুইটি দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর পাটবাড়ি, বালাটারি, পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী উপাশু, কাউনিয়া উপজেলার থানা লেভেল ক্রসিং, তকিপল হাট রেলগেট, খোর্দ্দ বালাপাড়া লেভেল ক্রসিং, খোপাতী ও তপসীডাঙ্গা লেভেল ক্রসিং, পাঞ্জরভাঙ্গা লেভেল ক্রসিং, শহীদবাগ লেভেল ক্রসিং, বুদ্ধির বাজার বাঁধের রাস্তা লেভেল ক্রসিং, মহেশা রেল গুমটি, মৌল লেভেল ক্রসিং, বল্লভবিষু লেভেল ক্রসিং সহ রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি লেবেল ক্রসিং অরক্ষিত রয়েছে। এসব লেভেল ক্রসিংগুলোর রাস্তা দিয়ে দিন-রাত বিভিন্ন যানবাহন, মানুষ ও গবাদিপশু চলাচল করলেও নেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো পাহারাদার বা গেটম্যান। তাই হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা আর প্রাণহানি। এতে অরক্ষিত এসব লেভেল ক্রসিং এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ নীরব। তবে হুইসেল বাজিয়ে চলছে ট্রেন। এর কারণে পথচারীরা সবসময় আতঙ্কে থাকেন।

এবিষয়ে জানতে কাউনিয়া রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার হোসনে মোবারকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তকিপল বাজার রেলগেটে একজন গেটম্যান রয়েছেন। ওই গেটম্যান সকাল-সন্ধ্যা ১২ ঘণ্টা ডিউটি করেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত তকিপল বাজার রেলগেটটি অরক্ষিত থাকে।

তিনি আরও জানান, দেশের প্রতিটি রেলগেইট নিয়ন্ত্রণ করে রেলের দু’টি শাথা, একটি হচ্ছে ট্রাফিক শাখা আরেকটি হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা। গেইটম্যান দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে, কোন কাজ হয়নি। তার পরেও চেষ্টা চলছে।