পেঁয়াজের বাজার ফের চড়া

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৩, ১৭:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সে দেশের সরকার গত ১৯ আগস্ট রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এ খবর পেয়েই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিনই ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আসছে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক। তারপরও সাতক্ষীরায় পেঁয়াজের বাজার চড়া। ভোমরা বন্দরে আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে
বাড়ছে। ২১ আগস্ট ভোমরা বন্দর দিয়ে ৮৭ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ২২ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১৫টি ট্রাকে পেঁয়াজ এসেছে। আরও ৭০টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে।

বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো না হওয়ায় ভারত আর পেঁয়াজ রপ্তানি করবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে  আছেন সিঅ্যান্ডএফ নেতারা। আমদানিকারকরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করতে খরচ হবে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ভোমরা স্থলবন্দরেই এই পেঁয়াজ বিক্রি হবে কমপক্ষে ৬০ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হতে পারে। এর থেকে বেশি দামে বিক্রি হলে সেটি বাজারের ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া আর কিছু না। ভারতের শুল্ক আরোপের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতিতে ২০ টাকা। নতুন শুল্কে আমদানি করা পেঁয়াজ এখনো বাজারে সেভাবে না গেলেও দাম ঠিকই বেড়েছে। শুল্ক বাড়ানোর কারণে বাজারে দাম একটু বাড়বে, এটা স্বাভাবিক। তবে, সেটা খুব বেশি হওয়ার কথা নয়। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্রেতারা।

বুধবার (২৩ আগস্ট) সকালে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আমিনুর রহমান, রেজাউল করিম বাবুলসহ অনেকেই জানান, তিন দিন আগে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ৫৫ টাকা কেজি। আজ সেই পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। এভাবে বাড়লে ক্রেতাদের সাধ্যের বাইরে চলে যাবে পেঁয়াজের দাম। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিকারক ভোমরা স্থলবন্দরের মো. মিজানুর রহমান ও পঙ্কজ দত্ত জানান, ভারত সরকার শুল্ক নির্ধারণ করলেও সে অনুযায়ী কিন্তু শুল্ক আদায় করছে না। ফলে, কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫ টাকা বৃদ্ধি হওয়ার কথা। কিন্তু, যেভাবে বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে, সেটা দুঃখজনক। এটা কারসাজি ছাড়া অন্য কিছু না।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম আমির হামজা জানান, ভারতে বন্যার কারণে উৎপাদন ভালো না হওয়ায় পেঁয়াজ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন শুল্ক আরোপ করেছে। শেষ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে কি না, সেটা নিয়েও সংশয় আছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যায়োসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু বলেন, দেশের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখই বাংলাদেশ সরকারকে ভারতীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে শুল্ক প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বাবু বলেন, বর্তমানে বাজারে দেশি পেঁয়াজের সঙ্কট আছে। এজন্য ভোক্তারা ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। ভারত সরকার পেঁয়াজের শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যেটার প্রভাব পড়েছে খোলা বাজার পর্যন্ত। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি না করে, সেদিকে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোমরা স্থলবন্দর থেকে পাইকারি দরে পেঁয়াজ কিনছেন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তিন দিন আগেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।