সংসদ সদস্যকে অপহরণ করে বিয়ে!

প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১৯:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  নেত্রকোণা প্রতিনিধি

জাতীয় সংসদের আসন নং ১৬১ নেত্রকোণা- ৫ (পূর্বধলা) এর সদস্য ৬৪ বছর বয়স্ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে (বীর প্রতীক) অপহরন করে এক যুবতির বিয়ে করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে জেলার পুর্বধলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

৯জনকে আসামী করে দায়ের করা এই মামলায় নাদিয়া আক্তার (২৬) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীও রয়েছেন। অন্য আসামীরা হলেন-  নাদিয়া আক্তারের ছোট ভাই পুর্বধলা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তাইফ (২০), উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন (২৪), সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী ফেরদৌস আলম (৪২) ও কামরুজ্জামান (৪২), গাড়ী চালক শফিকুল ইসলাম (৪৫), কলেজ শিক্ষক নাদেরুজ্জামান (৪২) ও রতন পাল (৩২) ও ছাত্রলীগ কর্মী শাহ আলীম (৩২)। সংসদ সদস্যের স্ত্রী রওশন হোসেন বাদী হয়ে গত বুধবার মামলাটি দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা একসময় সংসদ সদস্যের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁরা সংসদ সদস্যের বিভিন্ন কাজকর্ম দেখাশোনা ছাড়াও মৌখিক নির্দেশে বিভিন্ন অফিস আদালতে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করতেন। এ সুযোগে তাঁরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

আসামিরা সংসদ সদস্যের নাম ভাঙিয়ে ও তাঁর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের কথা বলে লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে দুই কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাত্ করেছেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তারা সংসদ সদস্যকে ভুল তথ্য দিয়ে গ্রামের বাড়ি পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রাম থেকে গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যান এবং ধানমন্ডি এলাকায় একটি বাসায় আটকে রাখেন। পরে গাড়িচালক সংসদ সদস্য বিদেশ চলে গেছেন বলে তাঁর স্ত্রীকে (মামলার বাদী) জানায়। 

মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, আসামিরা সংসদ সদস্যকে জিম্মির পর তাঁর স্বাক্ষর জাল করে নাদিয়া আক্তারের সঙ্গে সংসদ সদস্যের বিয়ের একটি ভুয়া কাবিননামা তৈরি এবং একইভাবে রওশন হোসেনের একটি ভুয়া তালাকনামা তৈরী করে পাঠিয়েছে। পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব ভুয়া কাগজ ফটোকপি করে ডাকযোগে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠিয়েছে তারা। 

এজাহারের তথ্যমতে, গত ২৭ মার্চ বিকেলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজির পর ঢাকার একটি বাসা থেকে সংসদ সদস্যকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য তাঁকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। সেখানে তাঁর মেয়ের বাসায় রেখে চিকিৎসা শেষে গত ১১ আগস্ট তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। 

এ ব্যাপারে জানার জন্য মোবাইলে ফোন করে ও ম্যাসেজ পাঠিয়ে সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীর প্রতীক) -এর নিকট থেকে সাড়া পাওয়া যায় নাই।
সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী মামলার অন্যতম আসামী ফেরদৌস আলম সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান-  মামলাটি ভিত্তিহীন। সংসদ সদস্য গত ১৩, ২৩ ও ২৬ মার্চ পূর্বধলায় বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছেন। এ ছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তিনি। 

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে (বীর প্রতীক) অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।