চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ট্রেন-পুলিশ ভ্যান সংঘর্ষের ঘটনায় গেটম্যান মাহমুদ হাসান দীপুকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ। রোববার (২৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) সামিউর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় গেটম্যানের কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম।
তিনি বলেন, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সামিউর রহমান থানায় এজাহার দিলে গতকাল রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দুই তদন্ত কমিটিকেই আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর-আল-নাসীফকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সীতাকুন্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম নায়হানুল বারী, সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মালেক।
অন্যদিকে ঘটনার পর পরই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কমিটির সদস্যরা হলেন- বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনিসুর রহমান, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান, বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিএন-১) রফিকুল ইসলাম ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যাট রেজাউনুর রহমান।
রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে সীতাকুন্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকায় রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় থানার একটি পুলিশ ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে তিন পুলিশ কনস্টেবল নিহত ও এক ইউপি সদস্য এবং আরও দুই পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।
এদিকে সীতাকুন্ড সংবাদদাতা নন্দন রায় জানান, সীতাকুন্ডে দূর্ঘটনায় আহত দুই পুলিশের মধ্যে এস আই সুজন শর্মার অবস্থা আশংকাজনক। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন শর্মার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়েছে। তাঁর এখনো জ্ঞান ফেরেনি বলে জানান সীতান্ডুন্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, এসআই সুজন শর্মার মাথার হাড় ভেঙে গেছে। গতকাল দুই ঘণ্টা ধরে তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা। এরপর তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে সোমবার সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে থাকা গাড়িচালক পুলিশ কনস্টেবল সমর চন্দ্র সূত্রধর ও ইউপি সদস্য মো. শাহাদাত হোসেনের অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তাঁরা মোটামুটি শঙ্কামুক্ত।