উখিয়া হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় ডেঙ্গু  আক্রান্ত শারমিন আক্তার লিজা(৮) নামের এক শিশু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালে ভাংচুর করে।

রবিবার (২৭ আগস্ট) রাতে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিমানিশু ওয়ার্ডে এই রোগীর মৃত্যু হয়৷ 

শারমিন আক্তার লিজা (৮)উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সোনাইছড়ি সমিতিরঘোনা এলাকার আফাজ উদ্দিনের মেয়ে৷

প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানান যায়, শারমিন আক্তার লিজা জ্বরে আক্রান্ত হলে রবিবার বিকালে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডেঙ্গু টেস্ট দিলে কোট বাজার অরিজিন হাসপাতালের টেস্টের রিপোর্টে পজিটিভ আসলে আবারও উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে৷ পরে রোগীকে নিরাপদ মা ও নিরাপদ শিশু (নিমানিশু) ওয়ার্ডে ভর্তি করে৷ রোগীর স্বজনরা ডিউটি ডাক্তার ও নার্সকে পূনরায় দেখার অনুরোধ করলে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগী দেখতে না আসায় রোগীর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে চিৎকার করলে হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সরা রোগীর স্বজনদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে রোগী শারমিন আক্তার মারা যায়।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, মৃত রোগীর লাশ হাসপাতালের নিরাপদ মা ও নিরাপদ শিশু (নিমানিশু) ওয়ার্ডের বাহিরে রাখে৷ পরে রোগীর স্বজনরা ৯৯৯ এ কল দিলে উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে রোগীর স্বজনদেরকে উদ্ধার করে।

অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে মৃত্যু রোগীর শারমিন আক্তার লিজা মামা খালেকুজ্জামান বলেন, আমার ভাগিনী হঠাৎ জ্বর হলে পরিক্ষা করার পর ডেঙ্গু পজেটিভ আসলে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ডাক্তারকে ডাকতে গেলে ডাক্তার ঘুম থেকে উঠে রোগী দেখতে আসবে বললেও আসে নাই৷ পরে রোগী মৃত্যু নিশ্চিত হলে ডাক্তার এসে রোগী দেখে মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে জানান৷ 

আমরা চিৎকার করলে নার্স ও গার্ড কর্মীরা আমাদের একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে আমার উদ্ধার করে লাশসহ বাড়িতে পৌঁছে দিয়৷ আজ সোমবার সকালে রোগীর দাফন সম্পন্ন হয়৷

এদিকে উখিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বড়ুয়া রাজন সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাজেদুল ইমরান শাওনের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার জন্য অনুরোধ করেন৷

উখিয়া হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সায়েদুল ইমরান শাওন জানান, রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়া আমরা রোগী ভর্তি করতে অনীহা প্রকাশ করি এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রোগীকে রেফার করে দিতে চাই। কিন্তু রোগীর আত্মীয় স্বজন রেফার না নিয়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষকে মুসলেকা (ভন্ড স্বাক্ষর) দিয়ে জোর করে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করান। কিন্তু আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার পূর্বেই রোগী মৃত্যুবরণ করেন। পরে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ডাক্তার, নার্সকে মারধর করেন এবং হাসপাতাল ভাংচুর করেন। এই ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। 

৯৯৯ এ ফোন পেয়ে উখিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে রোগীর আত্মীয় স্বজনদের উশৃংখল অবস্থায় দেখি, পরবর্তীতে তাদের শান্ত করে রোগীর আত্মীয় স্বজনদের উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।