নেত্রকোনার কলমাকান্দায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধীক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার (সেপ্টেম্বর) বিকেল দুইটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ধরে এই সংঘর্ষ চলে। রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। আহতরা কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গুরুতর আহতদের নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে টহল জোরদার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলের দিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল করে নেতাকর্মীরা কলমাকান্দা সদরের বিএনপি কার্যালয়ে আসতে শুরু করেন। এতে বাধা দেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যূৎ চক্রবর্তী, মাসুম মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবুল মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, যুব শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রসুল, সদস্য সচিব শেখ রবিন, সদস্য মাজহারুল ইসলাম হৃদয়, সোহানুর রহমান, শ্রমিকদল নেতা রুবেল মিয়া, যুবদল নেতা ভুট্টু মিয়া, স্বপন মিয়া, তাইমুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খোকন মিয়াসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হন পুলিশের এএসআই মামুন ইবনে হেলাল, এএসআই শরিফ উদ্দিন, এএসআই আসাদুজ্জামান, পুলিশ সদস্য সাজাদ হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিশোটা নিয়ে মিছিল করেন। তাদের হামলায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠণের ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে তার দাবী।
অপরদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ খায়ের বলেন, আমরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে অনুমতির জন্য থানায় যেতে চাই। আমাদেরকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। বিকেলের দিকে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা অফিসের দিকে আসতে থাকলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠণসমূহের অন্তত: ২০জন নেতা-কর্মী আহত হন।
কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিশোটা নিয়ে রাস্তায় মিছিল ও টায়ার জ্বালিয়ে জনদূর্ভোগ সুষ্টি করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নাই। তবে পুলিশের উপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।