পুলিশ, বনবিভাগসহ স্থানীয় জনতার সাড়াশি 'ব্লক রেইডে' তিন দিনেও নিখোঁজ বনবিভাগের সিপিজি দলের তিন সদস্যদের সন্ত্রাসী চক্রের জিন্মি দশা থেকে উদ্ধার করা যায়নি।এ ঘটনায় অপহৃত পরিবার সহ পুরো টেকনাফ জুড়ে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
অপহৃত মো. শাকেরের বড় ভাই মো. আয়ুব দাবি করেন, অপহরণকারী চক্রটি তার মায়ের মুঠোফোনে কল দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে এবং বার বার নির্যাতনে 'ভয়ংকর' শব্দ শুনাচ্ছেন। টাকা দিতে না পারলে তাদের মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
আয়ুব আরও দাবি করেন, গত শনিবার সকালে মায়ের মুঠোফোনে দূর্বৃত্তরা জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। গতকাল রবিবার সকালে তা কমিয়ে সর্বশেষ আবারো ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। গরীব পরিবার হওয়ায় এত টাকা যোগাড় করা তাদের পক্ষে অসম্ভব বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় পুরো এলাকার বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন ও আতংকের মধ্যে রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে গতকাল রবিবার দুপুরে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সারওয়ার আলম জানান, অপহৃত তিনজনই সিপিজি দলের সদস্য। তাদের উদ্ধারের জন্য পুলিশ, বনবিভাগসহ স্থানীয় লোকজন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুবাইর সৈয়দ জানান, পুরো পাহাড়জুড়ে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী মেম্বার জানান, সিপিজির তিন সদস্য অপহরণের ঘটনার পর থেকেই পাহাড়ে তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছি। দুইদিন অতিক্রম হলেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। বন পাহারাদার অপহরণের শিকারের সাধারণ মানুষ অপহরণ আতঙ্কে আছি। টেকনাফের এ অংশে দিনের পর দিন অপহরণের ঘটনা বাড়ছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকালে ন্যাচার পার্কের বন পাহারা দিতে গিয়ে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় বাসিন্দা ও সিপিজি বন পাহারা দলের সদস্য আবদুল মালেকের ছেলে মোহাম্মদ শাকের (২৪),মৃত আবদুল শুক্কুরের ছেলে আব্দুর রহিম (৩৭) ও মৃত বকসু মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান (৩২)।
কোথাও খোঁজ খবর না পেয়ে রাতেই টেকনাফ মডেল থানায় আবদুল মালেক বাদী হয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
পরের দিন মুক্তিপণ চাওয়াতে নিশ্চিত হওয়া য়ায় যে, তারা অপহরণের শিকার হন।
প্রসঙ্গতঃ টেকনাফে এ পর্যন্ত শতাধিক অপহরণের ঘটনায় দেড় শতাধিক লোক অপহরণকারীর কবলে পড়েছেন। যারা মুক্তিপণ দিতে পেরেছেন তারা ফেরত আসতে পেরেছেন। মুক্তিপণ দিতে না পেরে এক টমটম (ইজিবাইক) চালকসহ ছয়জন খুন হয়েছেন। অপহরণকারীদের নির্মূলে যৌথ ও সাড়াশি অভিযান দাবি করেছেন স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা।