ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ এর আওয়ামী লীগ প্রার্থী খালিদ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ এর আওয়ামী লীগ প্রার্থী খালিদ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে মাঠের ততই উত্তাপ বাড়ছে। এখন প্রতিটি রাস্তা ঘাটে , চায়ের দোকানে , নির্বাচনীর গল্প । কিভাবে নির্বাচন হবে এবার ? আগের মত ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মত নির্বাচন হবে নাকি ? কিংবা তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ বড় দুই দলের অংশগ্রহনে অংশগ্রহন মুলক নির্বাচন ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় এখন আলোচনার বিষয় । দিনাজপুর -২ আসন ( বিরল + বোচাগঞ্জ) দুই উপজেলার । ও একটি পৌরসভা একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত । এই আসনে মোট ভোটার রয়েছে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ২৯০ জন । ভোট কেন্দ্র ১১৩ টি ।

স্বাধীনতার ৫২ বছরে মাত্র আট বছর বাদ দিয়ে বাকি সময় ধরে এই আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। ২০০১ সালে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আসনটিতে বিএনপির কাছে আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়। আর ১৯৮৮ সালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আসনটিতে জয় করে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জতীয় সংসদ নির্বাচনেও আসনটিতে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখবে বলে এলাকাবাসী ও ভোটারদের ধারণা।

তবে, আসনটিতে কোনভাবেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে রাজি নয় বিএনপি। ইতোমধ্যে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামীও। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য টানা তিনবারের সংসদ সদস্য (এমপি), আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ২০০৮ সালে প্রথমবার জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহন করেই বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালের নিয়ম রক্ষা নির্বাচনে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আলহাজ্ব সাদিক রিয়াজ চৌধুরীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।

ব্যক্তিগত কর্মতৎপরতায় খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এই আসনটিতে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত বলে ধারণা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেকজন শক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলির সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সতীশ চন্দ্র রায় এর কনিষ্ঠ ছেলে ডা: মানবেন্দ্র রায় মানব। আর বর্ষিয়ান এ নেতার প্রতি এলাকার সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে বলে জানান তার সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা। এছাড়া বিরলের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিরল পৌর মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর জানান, আওয়ামী লীগ সরকার বিরলকে পৌরসভায় উন্নীত করার পাশাপাশি রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছে। জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। আমরা সব সময়ের জন্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামী নির্বাচনে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর নের্তৃত্বে আমরা আবারও বিজয়ী হয়ে বিরল বাসীর প্রাণের দাবী বিরল স্থল বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়াসহ অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে। তবে বিএনপি থেকে নির্বাচনের বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।

বিএনপি দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবেন সে বিষয়ে এখনই ভাবছে না বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপি এখন নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ভাবছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ছাড়া বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেনা। বিএনপি সে লক্ষ্যেই আন্দোলন করে যাচ্ছে। তবে বিএনপির একটি সূত্র থেকে জানা যায়, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক প্রার্থী হবেন। গতবারও তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এছাড়া প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম ও বিরলের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বজলুর রশীদ কালু।

বোচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া নিরপেক্ষ কোন ব্যবস্থায় নির্বাচন হলেই কেবল দল নির্বাচনে অংশ নেবে। সে লক্ষ্যেই আমরা মাঠে কাজ করছি। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ২ জন। এর মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান বোচাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. জুলফিকার আলী ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিরল উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এ্যাড. সুধীর চন্দ্র শীল।

এদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার চৌধুরী জীবনও প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। এডভোকেট জুলফিকার হোসেন জানান, অবশ্যই একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। জনগণ বর্তমানে গণতান্ত্রিকভাবে দিশেহারা। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ একটি পরিবর্তন আশা করছে। আমরা আশাবাদি। গত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছিলাম । গত জাতীয় নির্বাচনের কথা এখনও মনে পড়লে বুক ফেটে কান্না চলে আসে ।

এদিকে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় নিরবে প্রচারনা চালাচ্ছেন জামায়াতের প্রার্থী বিরল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক অধ্যক্ষ একেএম আফজালুল আনাম। প্রকাশ্য সভা-সমাবেশ না করলেও দলীয় ফোরামে এবং মাঠ পর্যায়ে তিনি ও তার দলের নেতা-কর্মীরা প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন।

দ্বাদশ,প্রার্থী,দিনাজপুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত