মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই ছেলে বউ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার এক শাশুড়ি থানায় দুই বউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মারধর করার পর তরকারির গরম ঝোল ফেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে থানায় আসতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি।
নির্যাতনের শিকার ওই শাশুড়ির নাম রহিমা খাতুন(৭১)। সেই গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া মধ্যমকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রীর বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধা জানান, তার তিন ছেলে সবাই প্রবাসী। বড় ছেলে কাউসারের পরিবার অন্যত্র ভাড়া থাকে। মেঝো ও ছোট ছেলের বউ তার বাড়িতে বসবাস করছে। ছেলেরা দেশের বাইরে থাকার সুবাদে দুই ছেলে বউ রুমা আক্তার সামিয়া ও রত্না আক্তার ইয়াবা বিক্রিসহ নানা অবৈধ-অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জুয়ারীদের জুয়া খেলার জন্য রুম ভাড়া দিতেন তারা। বিষয়টিগুলো তার কাছে ভালো না লাগার তিনি তার প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৬ আগস্ট রাতে তার শোবার ঘর থেকে বালিশ কাথাসহ সবকিছু নিয়ে গিয়ে তাকে ফ্লোরে ঘুমাতে বলে দুই বউ। পরদিন (২৭ আগস্ট) সকালে বিষয়টি তিনি আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা প্রথমে তাকে মারধর এবং পরবর্তীতে গায়ের উপর তরকারির গরম ঝোল ঢেলে দেয় এতে তার গায়ের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে কুমিল্লার গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
থানায় অভিযোগ করার সময় তার সাথে আসা স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম রবি বলেন, উনার ছেলেরা সবাই বিদেশ থাকে। তার এক মেয়ে তাকে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরেন। তবে শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল থাকায় এবং গায়ের বিভিন্ন অংশে পুড়ে যাওয়ায় তিনি জামা কাপড় পড়তে পারতেন না। এখন অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে স্থানীয় মুরুব্বীদের পরামর্শে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী বলেন, ভুক্তভোগী এক বৃদ্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।