কক্সবাজারে ‘বেড়াতে আসা’ এক তরুণীকে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে আবাসিক কটেজে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের মামলার এজাহারভূক্ত আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারি পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের রাবার বাগান এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তার মো. মনিরুল ইসলাম ওরফে হারবদল (৩৫) কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া এলাকার নুর আহমদের ছেলে। সে মামলার এজাহারভূক্ত ২ নম্বর আসামি।
এর আগে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে মামলার প্রধান আসামী সোলায়মান শামীমকে (২৩)।
গত ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ভূক্তভোগী তরুণী (১৯) তিন বান্ধবীসহ পরিচিত এক ব্যক্তিকে নিয়ে কক্সবাজার আসেন।.তারা কক্সবাজার পৌঁছার পর কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক হোটেল মেরিন প্লাজায় উঠেন।
পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টায় হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে ভূক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে আসা এক বান্ধবীকে নিয়ে সুগন্ধা পয়েন্ট সড়কে কাঁকড়া খেতে যান। কাঁকড়া খাওয়া শেষে হোটেল কক্ষে ফেরার সময় তাদের ৩/৪ জনের একদল দুর্বৃত্ত জোরপূর্বক অটোরিকশায় তুলে রাজন কটেজে নিয়ে যায়। সেখানে দূর্বৃত্তরা আলাদা কক্ষে রেখে জিন্মি করে। পরে ভূক্তভোগী তরুণীকে দূর্বৃত্তরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ঘটনার পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর দূর্বৃত্তরা ভূক্তভোগীসহ দুই তরুণীকে কক্সবাজার কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনালে নিয়ে ঢাকাগামী একটি বাসে তুলে দেয়। বাসটি রামু বাইপাস সড়ক এলাকায় পৌঁছলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ভূক্তভোগী তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে ভূক্তভোগী তরুণী বাস থেকে নেমে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলেও তার বান্ধবী ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের খবরে পুলিশ ওই তরুণীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে ঘটনায় ভূক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
র্যাবের সহকারি পরিচালক আবু সালাম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে এসে আবাসিক কটেজে তরুণীকে গণধর্ষণ মামলার এজাহারভূক্ত দুই নম্বর আসামি মো. মনিরুল ইসলাম ওরফে হারবদল রামু উপজেলার রাবার বাগানের দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থানের খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান তিনি।
আবু সালাম জানান, গ্রেপ্তার আসামিকে শুক্রবার সকালে কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।