এলজিইডি’র তত্বাবধায়ন
সিরাজগঞ্জে ভদ্রাবতী খাল পুনঃখনন কাজ সমাপ্তির পথে, সুফল পাচ্ছে এলাকাবাসী
ব্যয় ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:১০ | অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের শয্য ভান্ডার খ্যাত তাড়াশ উপজেলার ভদ্রাবতী খাল পুনঃখননে ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির পথে। এ প্রকল্পের ইতোমধ্যেই সুফল পেতে শুরু করেছে স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজগঞ্জের তত্বাবধায়নে জনস্বার্থে টেকসই ক্ষদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের ওই উপজেলার বারুহাস ও তালম ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ ভদ্রাবতী খালে এ দুটি প্রকল্পের কাজ বান্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উল্লেখিত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি বিধিমতে চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম থেকে এ প্রকল্প দুটির কাজ ওই দুটি ইউনিয়নের উত্তর ভদ্রাবতী পানি নিষ্কাশন সমবায় সমিতি ও দক্ষিণ ভদ্রাবতী পানি নিষ্কাশন সমবায় সমিতি যৌথ উদ্যেগে শুরু করে। এ সমিতি দুটির নারী পুরুষ মিলে উপকারভোগী সদস্য সংখ্যা ৩০৮১ জন ও প্রকল্প দুটির উপকৃত এলাকা ১৭’শ হেক্টর জমি এবং ইতিমধ্যেই এ প্রকল্প দুটির ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ খাল দুইটি চলনবিল অধ্যুষিত নিম্নাঞ্চল এলাকায় হওয়ায় বগুড়ার সিংহভাগ পানি ও সংশ্লিষ্ট খালের পার্শ্ববর্তি এলাকার পানি এ খাল দুটি দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ওই বিলের মধ্যেবর্তি বেসানি নদিতে পতিত হয়। অতি বৃষ্টিতে আগাম বন্যায় এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ১৫’শ হেক্টর আবাদি জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। এতে কৃষকেরা একের অধিক ফসল/শস্য উৎপাদন করতে পারেনা। বর্তমানে খাল দুটির খনন কাজ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষনস্থায়ী বাধ দিয়ে সম্পূর্ন পানি নিষ্কাশন করে পুনঃখনন কাজ চলছে। এ প্রকল্পের কাজ স্থানীয় উপকারভোগীদের সমন্বয়ে সমবায় আইন দ্বারা গঠিত এবং বাংলাদেশ সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সদস্যদের নিয়ে গঠিত মোট ৪২ টি এলসিএস গ্রুপ কর্তৃক খাল পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরাসরি প্রান্তিক পর্যায়ের জনগনের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার কর্তৃক এ প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্প দুটিতে প্রায় ৩ হাজার স্থানীয় সদস্য রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় দেড় হাজার সদসদের নিয়ে এলসিএস গ্রুপ করা হয়েছে। যারা প্রত্যক্ষ ভাবে খাল পুনঃ খনন কাজের সাথে সরাসরি সংপ্রিক্ত রয়েছে। এ অঞ্চলে সেচ সুবিধা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, আগাম বন্যার হাত থেকে কৃষকের ফসলী জমি রক্ষা ও প্রান্তিক জনগষ্ঠির আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ওই উপজেলার প্রায় ১৫’শ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় তিন ফসলি জমি পরিণত হয় এক ফসলে। এমন ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে ওই খাল পুন:খননের দাবিতে এলাকার কৃষকেরা দাবি করে আসছিল। এ দ‚রবস্থা নিরসনে এলজিইডি উল্লেখিত প্রকল্পের আওতায় খাল দুটি পুন:খনন শুরু করায় সরাসরি উপকৃত হবে এ এলাকার কয়েক হাজার কৃষক। আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর আবাদি জমি এবং উৎপাদিত হবে দুই থেকে তিন ফসল শয্য। এতে করে প্রায় ২৪৫০ মে. টন অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন হবে। এজন্য ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এলজিইডি, ভ‚গর্ভস্থ পানির উপড় চাপ হ্রাস করে ভ‚-উপরিস্থ পানি সেচের আওতায় এনে উল্লেখিত টাকা ব্যয়ে ওই দুটি ইউনিয়নের চৌধুরী বাড়ী জামে মসজিদ থেকে রানীরহাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ২৭.৫০ কিঃ মিটার খাল পুন:খননের কাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, এ দুটি পুন:খননে খালে ইতিমধ্যেই পানি প্রবাহ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের কৃষকের প্রত্যাশাও পূরণ হবে। জনস্বার্থে সরকারের এমন উন্নয়নে স্থানীয় কৃষকেরা এখন খুশি এবং এতে সুফল পেতেও শুরু করছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সিরাজগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার জনস্বার্থে ওই খাল দুটি পুন:খননের জন্য উল্লেখিত টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সরকারি বিধিমতে এ খাল দুটি পুন:খননের সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ কাজ শুরু থেকেই কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।
আগামী জুন মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবু সালেহ মো: হানিফ সম্প্রতি প্রকল্প দুটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি প্রকল্প কাজের সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট এলজিইডি বিভাগকে দিক নির্দেশনা দেন। এ দিক নির্দেশনায় ওই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।