নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে কে চাঁদাবাজী করে এটা সবাই জানে। এমপির লোকজন শহরে অটো রিকশা ঢুকায়। অটো রিকশায় এমপি মহোদয়ের স্টিকার লাগানো। শহরকে যানজট করে তুলেছে। আর ফুটপাত তো আমরা বানিয়েছি মানুষজন চলাচল করার জন্য। কিন্তু এ ফুটপাত হকারমুক্ত করতে গিয়ে আমাদের উপর হামলা হয়েছে। আমাদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। তাহলে কেন আমি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে যাবো। আমার পাশে তো তখন কেউ দাঁড়ায়নি। আমার তো পিস্তল নাই, কোন বাহিনী নাই। তাদের তো সব আছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ডিসি ও এসপি দুই এমপির কথায় চলে। আমাদের কথা নগরবাসীর কথা চিন্তা করে কম। যদি সব সময়ে এমনই হতে থাকে তাহলে তো আমার এমপিগিরি করতে হবে। প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন চাইবো।
সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা শেষে সুধী সমাবেশে বিভিন্নজনের প্রশ্নের জবাবে আইভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকাতে নিয়মিত মশার ওষুধ দেওয়া হয়। আমাদের কাউন্সিলররা কাজ করছে। কিন্তু মশা মরে না। কিছুক্ষণ ঝিম ধরে থাকে। তবে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। মশার লার্ভা ধংস করতে হবে।
ওয়াসার পানি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, নগরবাসী প্রচুর পানি নষ্ট করে। আবার অনেকে অবৈধভাবে চোরাই লাইন নেয়। বৈধভাবে যারা আছেন তারাও পানির বিল দেয় না। বাড়িতে গেলে উল্টো আমাদের অভিযানকারী টিমকে নাজেহাল করে। তবে অক্টোবর থেকে আমরা অভিযানে নামবো।
গত বছরের চাইতে ১০৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে ৬৯৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন রাজস্ব ও উন্নয়ন আয় থেকে মোট ৬৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ৮ হাজার ৯১৯ টাকা প্রস্তাবনা আনা হচ্ছে। একই সাথে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় বাবদ ৬৭২ কোটি ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৪ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা রেখেছে নাসিক। সংস্থাটির ভাবনা, এই বাবদ আয় ও ব্যয় নির্ধারিত থাকলে প্রায় ২৩ কোটি টাকা বাড়তি থাকবে।
এবারের বাজেটে রাজস্ব থেকে ১১৮ কোটি টাকা আয় এবং উন্নয়ন আয় থেকে ৪৫৭ কোটি টাকা আয়ের প্রস্তাবনা রেখেছে নাসিক। উন্নয়ন আয়ের মধ্যে বৈদেশিক সহায়তাই ৩৯৩ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া সরকারের উন্নয়ন খাত থেকে ১৮ কোটি এবং বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প সহায়তা থেকে ৬৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে নাসিক ৫৮৮ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র আইভী। সেই বাজেটে ব্যয় ধরা হয় ৫৫৯ কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৯ টাকা। একই সাথে উদ্বৃত্ত ধরা হয় ২৯ কোটি ২৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৯ টাকা।