বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব আল্লামা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী বলেছেন, সমগ্র দুনিয়ার মানুষের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ ও পন্থা হলো রাসূলুল্লাহ সা. এর সুন্নাহ পালন ও সাহাবাদর্শে জীবন গঠন। যুগে যুগে এ আদর্শ বাস্তবায়নে যারা দুনিয়ার বুকে কাজ করেছেন তাদের অন্যতম একজন হলেন যুগশ্রেষ্ট আধ্যাত্মিক রাহবার হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. শুধুমাত্র এক ব্যক্তির নাম নয়, বরঞ্চ একটি দর্শন ও চেতনার নাম। কারন, সমাজের প্রতিটি স্তরে যখন অন্যায়, দূর্নীতি আর জুলুমের সয়লাব হয়েছিল এমন এক অস্থিতিশীল মূহুর্তে সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায় দূর করে একটি আদর্শ সমাজ গঠনে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি মানুষকে আহ্বান করেছিলেন- এসো সকলেই তওবা করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেই। যদি নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারি তবেই সুষ্ঠু সমাজ ও আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। আজ হাফেজ্জী আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তার রেখে যাওয়া আদর্শ আমাদের সামনে রয়েছে। আমরা যদি সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যানে হাফেজ্জীর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে সচেষ্ট হই তবেই ইনশাআল্লাহ ঘুনে ধরা এ সমাজে আবার শান্তি ফিরে আসবে এবং আগামীর সফল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
আজ ১১সেপ্টেম্বর, সোমবার চাঁদপুর রোটারি ক্লাবে হাফেজ্জী হুজুর রহ. পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আতীকুর রহমান নান্নু মুন্সি, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও ঢাকা নগর নায়েবে আমীর মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, হাফেজ্জী হুজুর রহ. ছিলেন তওবার রাজনীতির প্রবর্তক। তিনি একদিকে যেমন ইলমী খিদমাত আঞ্জাম দিয়েছেন আবার মানুষের আত্মিক পরিশুদ্ধির লক্ষ্যে ইসলাহী অঙ্গনে কাজ করেছেন। ঠিক তেমনি জীবনের শেষ বয়সে এসে গণমানুষের অধিকার রক্ষায় সকল অন্যায় প্রতিরোধে এবং মানুষের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে নিরলস কাজ করেছেন। আমাদেরকে হাফেজ্জীর পথ ধরে এগিয়ে যেতে হবে। কোরআন সুন্নাহর আলোকে রাষ্ট্র পরিচালিত হলে দেশে রাজনৈতিক সংকট, ঘুষ - দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার থাকবে না। দেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বললেন, আজ হাফেজ্জী হুজুর রহ. আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার আদর্শ আমাদের কাছে আমানত। এ আমানত রক্ষায় আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং গোটা দেশে মাজলুম মানুষের সহায়তায় সকল জুলুমের অবসান ঘটাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতী এহতেশামুল হক উজানী বলেন, আজ নতুন প্রজন্মের অনেকেই ব্যক্তি হাফেজ্জীকে চিনে না এবং তার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানে না। সুতরাং যত বেশি হাফেজ্জীর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে আলোচনা হবে তত বেশি হাফেজ্জীর আদর্শ বাস্তবায়ন সহজ হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা-দীক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মুফতী এহতেশামুল হক উজানীর সভাপতিত্বে এবং মুফতী মুনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় উক্ত সভায় আরও বক্তব রাখেন মুফতী শাব্বির আহমাদ, মুফতী সিরাজুল ইসলাম,মুফতী আব্দুর রহমান নোমানী, মুফতী জাফর আহমাদ, মুফতী মাসউদুর রহমান, মাওলানা লিয়াকত হোসেন ও মাওলানা তারেক হাসান প্রমুখ।