বাবা-মাকে ঘরছাড়া করল সন্তানেরা

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রতারণা করে তিন ছেলে কর্তৃক বাসার জমি লিখে নেওয়া ও বাড়ির বউদের দেওয়া চুরির অপবাদ সইতে না পেরে ঘরছাড়া হয়েছেন এক বয়োবৃদ্ধ দম্পতি। নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের সাধুপাড়া মহল্লার এই ঘটনা।

জানা যায়, এক সময় অনেক জমির মালিক ছিলেন সাধুপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সুরেশ চন্দ্র দাস (৭০)। কালক্রমে প্রায় সবই হাতছাড়া হয়ে যায়। বাকি থাকে মাত্র ২০শতক জমি। এখানে ঘর বেঁধে স্ত্রী বেলী রানী দাস (৬০), চার ছেলে পরিমল চন্দ্র দাস (৫২), শ্যামল চন্দ্র দাস (৪৮), সাগর চন্দ্র দাস (৪৩) ও সজল চন্দ্র দাস (৩৮)সহ তাদের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে খেয়ে-না-খেয়ে কোন রকমে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। সম্প্রতি এই শেষ সম্বলটুকুও তার হাতছাড়া হয়ে যায়। শ্যামল চন্দ্র দাস, সাগর চন্দ্র দাস ও সজল চন্দ্র দাস জমিটুকু তাদের বাবার নিকট থেকে কৌশলে নিজেদের নামে দলিল করিয়ে নেয়। সরল-সহজ হওয়ায় তারা বঞ্চিত করে সবার বড়ভাই পরিমল চন্দ্র দাসকে। এখানেই শেষ নয়, জমি লিখে নেওয়ার পর বাড়ির বউয়েরা শশুড় সুরেশ চন্দ্র দাস ও শাশুড়ি বেলী রানী দাসের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। তারা তাদের শশুড়-শাড়িকে না খাইয়ে রাখে, চুরির অপবাদ দেয়। এ সব সইতে না পেরে গত ৩ সেপ্টেম্বর বাড়ি ছাড়ে বৃদ্ধরা। তারা সোমেশ্বরি নদির পাড়ে ছাপড়া বেঁধে সেখানেই বসবাস শুরু করে।

সুরেশ চন্দ্র দাস জানান, আমি বুড়া মানুষ, হেরাই আমার সবকিছু। কোনসময় কিবায় কেল্লাইগা টিপসই নিছে আমি কইতে পারি না। অহন কয় যে, তারা না-হি বাসা-জমির মালিক।

বেলী রানী দাস অসহায় কন্ঠে বলেন, তারা রান্না কইরা খাইছে, আমরারে দিছে না। ছেলে বউ কয়, আমি না-হি টেহা-পইসা, ঘরের জিনিষ চুরি করি। তারা ছেড়াইনরে কয় আমরারে ঘর থাইক্যা বাইর কইরা দিতে। এইবায় থাহন যায় ?

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজিব উল আহসান জানান, খবর পেয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে আমি সাধুপাড়া মহল্লার ওই বাসায় গিয়েছি। ছেলে-বউদের ডেকে এনে আলোচনা করেছি। ছেলেরা জমি ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে। এখন থেকে পিতা-মাতার ভরন-পোষন করবে বলেও কথা দিয়েছে ছেলেরা।

শ্যামল চন্দ্র দাস, সাগর চন্দ্র দাস ও সজল চন্দ্র দাস বলেন, রাগের মাথায় এই কান্ড ঘটছে। কাজটা ঠিক হয় নাই।