২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন : ফখরুল

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:০৫ | অনলাইন সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোট হয়েছিল। রংপুর তথা বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না।

আজ শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রংপুর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্হ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ১ দফা দাবীতে তারুণ্যের রোড মার্চে রংপুর টু দিনাজপুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, গনতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, ডাক্তার বলেছে তিনি খুব অসুস্থ দেশের ডাক্তারদের কিছু করার নাই। খালেদা জিয়ার পরিবারসহ আমরা বারবার সরকারের কাছে আবেদন করার পরও সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং কানের সমস্যার কথা বলে শেখ হাসিনা সে সময় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। এটাই বাংলাদেশের চিত্র।

তিনি আরো বলেন, সরকারের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে চাল, ডাল, তেলের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং এর কারণে কৃষকরা কৃষি কাজ করতে পারছেনা। দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের রিজার্ভ নেই। তারপরও সরকার কিছুই মনে করছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রোড মার্চ শুরু করেছি। সরকারের পদত্যাগ হলেই বাসায় ফিরবো। শেষে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রংপুর টু দিনাজপুরের রোড মার্চের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিগত পনেরো বছর ধরে আমরা লক্ষ্য করেছি এই সরকার কলাকৌশল করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সুচিন্তিতভাবে এই বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করবার কাজ করে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ  ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ আজকে অসহায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।  চাল, তেল, লবণসহ সবকিছুর দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে অনেক কিন্তু বিদ্যুৎ মানুষ পায় না। লোডশেডিং হতেই আছে কৃষি কাজে সেচ দিতে পারে না। আজকে ব্যাংকগুলো দুর্নীতি করে চুরি করে আওয়ামী লীগের লোকেরা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আজকে অর্থনীতি ক্রমাশয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে, ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। পত্রপত্রিকায় খুললেই দেখবেন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। রিজার্ভ তো তারা (সরকার) চুরি করছে, সেই কারণে অর্থনীতির চাকা ঘুরছে না। এই সরকার অর্থনীতিকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, নিজেরা দুর্নীতির পাহাড় তৈরি করেছে।

রংপুর থেকে তারুণ্যের রোড মার্চ শুরু করা প্রসঙ্গ মির্জা ফখরুল বলেন, রংপুরের একটা বিরাট ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্য হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ঐতিহ্য। এই রংপুরে ব্রিটিশ আমলে কৃষকদের বিপ্লবের মধ্যদিয়ে তেভাগা আন্দোলন হয়েছিল। রংপুরকে নিয়েই আপনাদের কৃতিসন্তান সৈয়দ শামসুল হক লিখেছেন নূরলদীনের সারাজীবন। সেই নূরলদীনের বিপ্লব বিদ্রোহ রংপুর থেকেই, সেদিন নূরলদীন ডাক দিয়েছিল জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়। আজকে রংপুর থেকেই আবার এই তরুণরা বাংলাদেশের মানুষকে ডাক দিচ্ছে- এই ভয়াবহ একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদ, লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য।

এরআগে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য রাখেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান,স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদ ইকবালসহ কেন্দ্রীয় ও স্হানীয় নেতৃবৃন্দ।

'জাগছে তারুণ্য জাগছে দেশ, টেইক ব্যাক বাংলাদেশ' স্লোগানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

এ ছাড়াও রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু,রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন, সদস্য সচিব আতিকুল ইসলাম লেলিন,  সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জহির আলম নয়ন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নুর হাসান সুমনসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষকদল, তাঁতী দল, মহিলা দল ওলামা দল এবং জাসাসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০টায় জাসাস শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে তারুণের রোড মার্চের প্রথম পর্ব শুরু হয়। পরে পথসভা শেষে গাড়িবহরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত তারুণ্যের রোড মার্চ রংপুর থেকে দিনাজপুর অভিমুখে যাত্রা করে। পথিমধ্যে রংপুর, নীলফামারী ও দিনাজপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে পথসভা করবে।