পেকুয়ায় ছাত্রদলের দু'পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:০৭ | অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদ্য ঘোষিত পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ ছাত্রদলের কমিটির দ্বন্ধে দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ছাত্রদলের এক নেতার বাবাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল আলম ও মোহাম্মদ রাজুকে বহিস্কার করেছে জেলা ছাত্রদল। সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন রিপন ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বলেন, ১৬ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ ইসফাতকে সভাপতি ও শাহাদাত হোছাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করে উপজেলা ছাত্রদল। এ কমিটি নিয়ে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমানের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তাঁদের অভিযোগ, কলেজ ছাত্রদলের ত্যাগী নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন ও আয়াতকে সভাপতি-সম্পাদক করা উচিত ছিল। কিন্তু তাদের করা হয়েছে যথাক্রমে সহসভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
পেকুয়া চৌমুহনীর প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী, ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার রাত আটটার দিকে পেকুয়া চৌমুহনী চত্ত্বরে কলেজ ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমানের সঙ্গে কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোছাইনের কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের বড়ভাই মোহাম্মদ রাজু ও উপজেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল আলম। এসময় পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাইমুর রহমান হৃদয়কে ধাক্কা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নাইমুর ছাত্রদল নেতা সাঈদী রহমানের অনুসারী। একপর্যায়ে পেকুয়া মেডিকেল সেন্টারে ঢুকে এরশাদুলকে বেদড়ক পেঠায় সাঈদীর অনুসারীরা। ঘটনার পরপরই সাঈদী তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। ঘটনাস্থলের ৫০ ফিট দূরত্বে দীর্ঘদিন ধরে একটি কক্ষে চিকিৎসা সেবা দেন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমানের বাবা পল্লী চিকিৎসক সাহাব উদ্দিন। ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী সেখানে গিয়ে সাহাবউদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দুপক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশ ছাত্রদল নেতা এরশাদুল আলমকে আটক করে নিয়ে যায়। আহত সাহাবউদ্দিনকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমান বলেন, 'ঘটনা বড় হয়ে যাচ্ছে দেখে আমি নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে আসি। এসময় আমাকে না পেয়ে আমার বাবাকে কুপিয়ে জখম করে এরশাদুল। বিষয়টি ছাত্রদলের উর্ধ্বতন নেতাদের জানানো হলে তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। এরশাদুল ও রাজুকে বহিস্কার করেছেন।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান বলেন, বিতর্ক উঠায় পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজ ছাত্রদলের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল আলম ও মোহাম্মদ রাজুকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, 'ঘটনাস্থল থেকে এরশাদুলকে আটক করা হয়েছিল। তবে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ মামলা না করায় তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।