নামজারি করতে কত ঘুষ নির্ধারণ করলেন নাজিরপুরের এসিল্যান্ড

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসের এসিল্যান্ডের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে তাতে শোনাগেছে প্রতিটি নামজারিতে কতটাকা ঘুষ তা তিনি নির্ধারন করে দিয়েছেন। সরকার নির্ধারিত নামজারি ফি ১ হাজার ১৭০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা না দিলে মিলবেনা সেবা। ভূমি অফিসে বিভিন্ন অজুহাত ও হয়রানির হুমকি দিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ বেশ পুরানো। এবার সরকার নির্ধারিত ফির ৫গুন টাকা ঘুষ হিসাবে নেওয়ার হার নির্ধারন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সহকারি কমিশনার (ভূমি) বিরুদ্ধে।

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সকল ইউনিয়নের ভূমি সহকারি কর্মকতাদের প্রতিটি নামজারিতে ৬ হাজর টাকা করে ঘুষ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন মাসুদুর রহমান নামে ওই কর্মকতা। তিনি নাজিরপুরের এসিল্যান্ড। ওই বৈঠকের একটি অডিও কথোপকথন এ প্রতিনিধির হাতে এসেছে।

জানা যায়, নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত খরচ ১হাজার ১শত ৭০টাকা হলে ও ভূমি অফিসের কর্মকতা রা দলিল ভেদে নেন ৫ হাজার থেকে ১৮০০০টাকা। অথচ নামজারিতে কোর্টফি ২০টাকা নোটিশজারি ফি ৫০টাকা রেকর্ড সংশোধন বা হাল করন ফি ১০০০টাকা এবং মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ ফি ১০০টাকা এর বাইরে কোন খরচ নাই। অথচ চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ না দিলে ভূমি অফিস থেকে নামজারি করতে পারেনা নাগরিকরা। কোন কারনে জমি হস্তান্তর হলে পুরানো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোকে নামজারি বলে।

অডিও কথোপকথন থেকে জানাযায় নাজিরপুর উপজেলা ভূমি সহকারি কর্মকতা দের নিয়ে গত জুলাই মাসে বৈঠক করেন নাজিরপুরের এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান।ওই বৈঠকের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। এখানে আপনাদের একটি কথা আপনাদের পরিষ্কার করে অবগত করতে হবে, আমি ইউ এন ও স্যারের চাপে আছি। আপনাদের মতামত শুনি প্রতিটি নামজারিতে কতকরে নেওয়া যায়। খোলামেলা আলোচনা করেন।উপস্থিত সকলে বললো স্যার আপনি যদি না বলেন তবে আমরা নিশ্চিত করবো কোন টাকা নেব না। কিন্তু বাস্তবে এটা হবে না। আপনারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। কাজ করতে গেলে স্বাভাবিক ভাবে খরচা হয়। বিভন্ন কথোপকথন শেষে ভূমি সহকারি কর্মকতা রা বলেন স্যার আগে ৫ হাজার নেওয়া হত এখন ৪ হাজর নেব। একপর্যায় এসিল্যান্ড বলেন সাড়ে ৫ হাজর নেবেন। আমাকে ৪হাজর দেবেন আপনারা দেড় হাজার নেবেন। তখন এক ভূমি সহকারি কর্মকতা বলেন স্যার ৬হাজার। তখন এসিল্যান্ড বললেন ৬হাজার ঠিক ৬হাজার ই। ১০০টাকা বেশি হলেই ব্যবস্থা নেব। গত অর্থ বছরে যেগুলো ছিল সেটা এ সপ্তাহের মধ্যে হিসাব করে রোববারের মধ্যে আমাকে বুঝিয়ে দিবেন। এছাড়া একটা রেজিস্টার বানাবেন যেটা ইন্টারনাল ব্যবহারের জন্য।

এব্যপারে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে এসিল্যান্ড কে পাওয়া যায়নি, তবে নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের ভূমিসহকারি কর্মকতা বলেন স্যার ঢাকায় গেছেন এছাড়া আমি কিছুই বলবনা।তবে শাখারীকাঠী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকতা বলেন, অফিসের কয়েক জনকে স্যার কাজ থেকে বিরত রাখায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জীব দাশ জানান, অডিওর বিষয়টি আমি এক দিন আগে জেনেছি। অভিযোগটি খুবই গুরুতর। এরই মধ্যে নাজিরপুর এসিল্যান্ডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, আমি অডিও কথাগুলো শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।