ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে সম্মেলন
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:২৮ | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রসঙ্গ, কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা তখন সাড়ে ১১টা। কিছুক্ষণ আগেই মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। আকাশ তখনো কালো মেঘে ঢাকা। ঠিক এমন সময় জেলা শহরের স্টেশন রোডে অবস্থিত কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে চলছে সংবাদ সম্মেলন। জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়ন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনাচ্ছেন জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকদের। নয়নের এপাশ-ওপাশে শতাধিক ছাত্রলীগের কর্মীরা বসে-দাঁড়িয়ে।
এত ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে লুৎফুর রহমান নয়ন ছাড়া এখানে আর কোন ছাত্রলীগ নেতা কেন নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে নয়ন বলেন, "২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কোনরকম সম্মেলন ছাড়াই আমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনকে সভাপতি ও ফয়েজ ওমান খানকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি স্বাক্ষর করে এক বছরের জন্য অনুমোদন দেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। শর্ত থাকে যে, তিনজন মিলে পুর্নাঙ্গ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি দ্রুত কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট জমা দিয়ে পুনরায় অনুমোদন আনতে হবে। কিন্তু তিন সদস্যের এই কমিটির এক বছর মেয়াদ পার হয়ে বাড়তি আরও তিন বছর সাত মাস পাড় হয়েছে। মোট প্রায় চার বছরেও পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে ব্যার্থ তিন জনের এই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি। পুর্নাঙ্গ কমিটি হলে আমার এপাশ-ওপাশে যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের অনেকেই পদ-পদবী পেয়ে নেতা হতেন। পুর্নাঙ্গ কমিটি না হওয়াতে চার বছর ধরে জেলা ছাত্রলীগে সবাই কর্মী হিসাবেই রয়ে গেছেন।"
তিন সদস্যের কমিটির আপনিও সাংগঠনিক সম্পাদক, এ ব্যর্থতার দায় আপনি নিবেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে নয়ন বলেন, অবশ্যই এ ব্যর্থতার দায় আমিও নিবো। তবে, তিন সদস্যের কমিটি অনুমোদনের পর থেকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আমার সাথে কোন কিছু সমন্বয় করেন না। তারা দুজন মিলে যা ইচ্ছে তা করে বেড়াচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লুৎফুর রহমান নয়ন বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ছাত্রলীগের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দুজন মিলে বিভিন্ন ইউনিটে কমিটি বাণিজ্য করছেন। অছাত্র, বিবাহিত এমনকি জামাত শিবির ঘেষা বিতর্কিত লোকদের নেতা বানিয়ে কমিটি দিচ্ছেন অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে। এছাড়াও টেন্ডারবাজীসহ বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা ভোগ করছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। এসব কারনেই পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে চাননা তারা জবাবদিহিতার ভয়ে, এটা এই চার বছরে প্রতীয়মান হয়েছে। অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতি করে বছরের পর বছর পদ পদবীর আশায় থেকে এখন হতাশায় নিমজ্জিত।
অচিরেই এ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি করার জোর দাবি জানান, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল ছাত্রলীগের কর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়ন, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা তানিম ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম স্বপন, কাজী আবেদীন সোলেমান, কামরুল ইসলাম রতনসহ সাবেক জেলা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।