তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমি সবসময় ভেবেছি, যখন এমপি পদে প্রার্থী ছিলাম তখন আমি দলীয় প্রার্থী। আর যখন নির্বাচিত হয়েছি তখন আমি সবার এমপি। আমি মনে করি, ক্ষমতায় গেলে ক্ষমতা দেখাতে নাই। আমার বিরুদ্ধে মাইকিং করেছে এমন ছেলের চাকরিও আমার হাত দিয়ে হয়েছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর নাসিরাবাদ কনভেনশন হলে নিবার্চনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ার বিশিষ্টজনদের নিয়ে আয়োজিত সুধী সামাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনী এলাকার সুধীজনদের উদ্দেশ্যে তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে এমপি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছেন, আমিও চেষ্টা করেছি সবসময় আপনাদের পাশে থাকার, জনগণের এমপি হিসেবে কাজ করার। দল-মত নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য আমার দুয়ার খোলা রেখেছি। কেউ আমার কাছে এসে খালি হাতে ফিরে যায়নি। আমি কখনো দেখিনি সে কোন দল করে, সে কি আমাকে ভোট দিয়েছিল, না ভোট দেয়নি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় শুধু এলজিইডির মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। আরো অনেক ডিপার্টমেন্ট আছে, সে হিসাব আজকে আনিনি। এমন কোন স্কুল, মাদ্রাসা নাই যেখানে ভবন পায় নাই। সরকারি কাজের কথা বাদ দিলাম, পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১ কোটি টাকার টিন বিতরণ করেছি। প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে পাওয়ার টিলার, কোনও কোনও ইউনিয়নে ৩টি করেও দিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তহবিল থেকে ২৪টি নতুন মসজিদ ভবন করে দিয়েছি। প্রতি বছর কয়েকজনকে ওমরা হজ করতে পাঠানোর চেষ্টা করি। এখন রাঙ্গুনিয়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫০টির বেশি ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটা ঘরে প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায় জনগণের দাবি ছিল-দুটি সেতু। একটি শিলক সরফভাটা, আর একটি রাজারহাট সেতু। সেখানে দুটি জায়গায় শুধু শিলক নদীতে ৫টি সেতু হয়েছে। কেউ কেউ বলেছিল, হাছান মাহমুদ দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ছেলে। সে উত্তর রাঙ্গুনিয়ায় কাজ করবে না। সেসময় আমি কথা দিয়েছিলাম, নির্বাচিত হলে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার কাজ আগে করবো। আমি কথা রেখেছি। কালীন্দি রাণী সড়ক আর মরিয়মনগর ডিসি সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, সেটিও হবে ইনশাআল্লাহ।
এসময় তিনি আরো বলেন, বর্তমানে রাঙ্গুনিয়ায় কোন বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই সেটি অনুসন্ধানের বিষয়। অথচ ২০০৯ সালের আগে আমার বাড়িতেই বিদ্যুৎ ছিল না। এখন ১০ বছরের ছেলেকে চেরাগ ও হারিকেনের কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলতে পারবে না। কারণ, হারিকেন ও চেরাগ সে কখনো দেখেনি। আর এখন বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন, ফ্রিজ, ব্রডব্যান্ড কানেকশন, আবার কারো কারো বাড়িতে এয়ার কন্ডিশনও আছে। এগুলো এমনি এমনি হয়ে যায়নি। এটি শেখ হাসিনার সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন ও আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় সুধী সমাবেশে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেকান্দর চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, ডা. রেজাউল করিম, দীপেন সাহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।