স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশকে অশান্ত ও অন্ধাকারের দিকে ঠেলে দিতে না চাইলে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরার নলতা এমআর কলেজ মাঠে নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছিল বলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ঘাতকরা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার ও সহযোগীদের হত্যা করে দেশ থেকে স্বাধীনতার চিহ্ন মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে। তিনি দেশকে ভালবাসেন, দেশের মানুষকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন দেশ আলোকিত থাকবে। আজকে আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তিত হয়েছি। দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। আজকে নারীরা সবখানে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
শেখ হাসিনা একজন খাঁটি মুসলমান, তিনি সকালে উঠে নামাজ আদায়ের পর কুরআন পাঠ করেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইসলাম রিসার্স করার জন্য মডেল মসজিদ স্থাপন করেছেন। ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাদ্রাসাগুলো আধুনিকায় করার কাজ চলছে। সরকার স্বাস্থ্যকে এগিয়ে নিতে হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে সেবার ব্যবস্থা করেছেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শেখ হাসিনা যা করছেন দেশের জন্য ইতিহাস করে যাচ্ছেন। আজকে বিগত দিনের তুলনায় দারিদ্রতা ৫% এ নেমে এসেছে। তার দক্ষতা, সততায় আজ বিশ্ব ব্যাপী সুনাম কুড়াচ্ছেন। আজ রোহিঙ্গাদের আশ্রায় দিয়ে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। যার ফলে মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধী পেয়েছেন। তিনি আজ সারাবিশ্বের জননন্দিত নেতা। তিনি দারিদ্র দেশ থেকে একটি সম্ভবনা দেশে পরিণত করেছে। আজকে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা ২০৩০ সালে সকলকে শিক্ষিত করব। ২০৪১-এ উন্নত দেশে পরিণত হব।
প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তাই করে দেখান বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা কোন কাজে ফেল করেননি। আমরা অবিশ্বাস্য উন্নয়নে দেশকে পাল্টে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ জনগনের উপর বিশ্বাস করে। ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জনগন যতদিন ভালবাসবে ততদিন ক্ষমতায় থাকবে। জনগন যখন বলবে তখন ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবে। আমরা দেখেছি কিভাবে ভুয়া ভোটার করেছে, কিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এমন কোন এলাকা নেই যেখানে শেখ হাসিনার বিকল্প চিন্তা করে। জনগন ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে শেখ হাসিনাকে নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আনাবে। আমরা আগের দিনের সরকার দেখেছি, জনগনও বুঝে গেছে তাদের আর চাই না। তাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। যারা সন্ত্রাস করেছে, যারা মানুষ হত্যা, মানুষের বাড়ি পুড়িয়েছে তাদের বিচার হবে। যারা এসব করেছে তাদের সবাই চিহ্নিত আছে।
যে সাতক্ষীরা আমি ২০১৪ সালে এসে দেখেছিলাম আজ সেই সাতক্ষীরা পরিবর্তন হয়ে গেছে। আজ সাতক্ষীরায় কোন ভয় নেই। অপরাধীদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। মানুষের বাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ দেওয়ার কথা ভুলে যান। সেই দিন আর নেই। নির্বাচনের সময় মানুষ আর ভুল করবে না। নেতাকর্মীরা দলের মধ্যে কেউ কারোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন না যাতে অন্যরা সুযোগ পাই। যাকে নৌকা দিবেন তাকে জয়ী করতে হবে। তাই শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিন।
নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিসুজ্জামান খোকনের সভাপতিত্বে কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোটোর সঞ্চলনায় এ সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে ফজলুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান, দেবহাটা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এসএম জামিল হোসেন, কালিগঞ্জ থানার অফিসার মামুন রহমান, দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবুল আক্তার, নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ এর অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ, এমপি পুত্র প্রকৌশলী জিয়াউল হক সুমন সহ জেলা, উপজেল, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
এর আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১২টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে পৌঁছান। সেখান থেকে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে নব নির্মিত ইনডোর প্লেগ্রাউন্ড উদ্বোধন করেন।