সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সেলিমগঞ্জের শান্তিপুর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে ভাতের সাথে ইদুর মারা বিষ খাইয়ে তিন সন্তানকে হত্যা করেছে মা। পরে মা নিজেও বিষ খেয়ে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খাবার জন্য শিশুদের মা যমুনা বেগম তার তিন সন্তানকে ভাত দেয় আর অগোচরে সেই ভাতের সাথে ইদুর মারার বিষ মিশিয়ে দেয়। পরে যমুনা ও সেই বিষ মেশানো ভাত খায়।
মারা যাওয়া শিশুরা হল- মেয়ে সাফিয়া (১৬), ছেলে তামজিদ (১৫), শাহেদ( ৫)।
জানা যায়, জামালগঞ্জ উপজেলার সেলিমগঞ্জের শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা যমুনার (৩৫)'র সাথে স্বামী জাহাঙ্গীরের দীর্ঘ দিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। স্বামী ঠিক মত কাজ করত না। যার ফলে পরিবারে অভাব নিত্যদিন লেগেই থাকতও।
এ নিয়ে গতকাল রাতেও তুমুল ঝগড়া হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। এরই জের ধরে সকালে ভাতের সাথে ইদুর মারার বিষ মিশিয়ে দেয় সন্তানদের ভাত দেয় এই ভাত তাদের মাও খায়। খাওয়ার পরই শুরু হয় বিষক্রিয়া। শিশুদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। এসে দেখতে পায় সবাই মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে চিৎকার করছে।
পরে তাদের দ্রুত উদ্ধার করে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তিন শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।
যমুনার স্বামী জাহাঙ্গীরের ফুফাত ভাই মিজানুর রহমানের সাথে কথা হয় সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তিনি বলেন, আমরা কিছু দিন ধরেই শুনছি তাদের পারিবারিক কলহ চলছে৷ কিন্তু আজ সকালে শুনেছি যমুনাসহ তার ছেলে মেয়েরা ভাতের সাথে বিষ খেয়েছে। আমার মনে হচ্ছে পারিবারিক অভাব অনটনের কারণেই এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমরা তাদেরকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু একটি শিশুকেও বাঁচানো সম্ভব হয় নি। মাও বাঁচবে কিনা তা এখনও বুঝা যাচ্ছে না। জাহাঙ্গীর কই আছে তা বলতে পারছি না।
শিশুদের মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.শফিকুল ইসলাম।