রাঙামাটি পর্যটন ঝুলন্ত সেতু। সিম্বল অব রাঙামাটি। কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় দীর্ঘ ২৩দিন ধরে ডুবে আছে সেতুটি। ডুবে থাকা ঝুলন্ত সেতুই রাঙামাটি পর্যটনের সার্বিক চিত্রের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে সকলের সামনে। মুলতঃ জেলার পর্যটন সম্ভাবনা, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা কাগজে কলমেই আটকে আছে। আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় না থাকার কারণে জেলার অপার সম্ভাবনাময়ী পর্যটন খাত আলোর মুখ দেখছে না বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
গত এক দশকে পাহাড়ের তিনজেলার মধ্যে পর্যটন খাতে বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি এগিয়ে গেলেও, রাঙামাটি সেভাবে এগিয়ে যেতে পারেনি। রাঙামাটির পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলেও ডুবে যাওয়ার কারণে গত ২৩ দিনে অস্বাভাবিক হারে কমেছে পর্যটকের সংখ্যা। এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে সংশ্লিষ্টখাতগুলোতে। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে, ঝুলন্ত সেতু মেরামতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে।এরমধ্যে ঢাকা থেকে প্রকৌশলী এসে দেখলেও সমাধান আসেনি।
এদিকে ব্যক্তি পর্যায়ে কিছু পর্যটন স্পট গড়ে উঠলেও অর্থ সংকট কিংবা সরকারী পর্যায়ের সহযোগিতা না থাকায় সেভাবে এগুতে পারছেনা। উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেসরকারী উদ্যোক্তারা পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোন সমস্যায় না পড়ে সেজন্য সরকারীভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান মহসীন রানা বলেন, রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগাতে হলে সকলের চিন্তাভাবনা এক হতে হবে। পর্যটন খাতকে ঢেলে সাজাতে হলে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় ও পরিকল্পনা প্রনয়ন এবং বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে।
সুত্র থেকে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার পর্যটনখাতকে আধুনিকায়ন করতে রাঙামাটি জেলা পরিষদ প্রায় ১২০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প প্রনয়ন করেছে। এ বিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, আমরা ১২’শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করেছি। যা বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে আছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রাঙামাটিতে পর্যটনখাত পরিপূর্ণতা লাভ করবে।
তবে, রাঙামাটির পর্যটন সম্ভাবনার বড় অন্তরায় হিসেবে অবৈধ অস্ত্রকে আখ্যায়িত করে গত কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত পর্যটন সম্ভাবনা শীর্ষক এক সেমিনারে স্থানীয় সাংসদ দীপংকর তালুকদার বলেছেন, অবৈধ অস্ত্র যতদিন থাকবে ততদিন পর্যটন সম্ভাবনা আলোর মুখ দেখবে না। অবৈধ অস্ত্র পর্যটন উন্নয়নে বড় বাঁধা। তিনি বলেন, সরকার এ অঞ্চলের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে খুবই আন্তরিক। যার ফলে, গত একদশকে পাহাড়ে অভুতপুর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধিত হয়েছে।