পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রথম জাহাজ এফবি বার আউলিয়া করে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে গেলো ৫১৭ জন পর্যটক।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটে টেকনাফের দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে ৫১৭ জন পর্যটক নিয়ে যাত্রা করে জাহাজটি। পরে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে জাহাজটি দ্বীপে পৌঁছায়। পরে আড়াই শতাধিক পযটক দ্বীপে রাত্রিযাপনের জন্য সেখানে অবস্থান করছেন। একইদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সেন্টমাটিন থেকে জাহাজটি টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওযানা হয়েছেন। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী।
সী-ক্রোজ অপারেটর অনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, বুধবার সকাল থেকে টেকনাফ দমদমিয়াস্থলে ‘বার আউলিয়া’ পর্যটকবাহী জাহাজ জেটি ঘাটে ভিড় করেন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। এ সময় কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশসহ বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা তদারকির দায়িত্বে পালন করেন। এরপর নিরাপদে ৫১৭ জন পর্যটক নিয়ে মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যে সেন্টমার্টিন পৌছায় পর্যটকরা। এসময় তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পর্যটন ব্যবসায়ী ও দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুনরায় জাহাজটি টেকনাফ উদ্দেশ্যে সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রামের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা নয়ন শীল জানান, ‘কোনো জাহাজ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেজন্য আমরা তদারকি করছি। প্রথম দিনে ৫১৭ জন যাত্রী নিয়ে ‘বার আউলিয়া’ জাহাজ সেন্টমার্টিন রওনা করে। এ জাহাজে ৮৫০ যাত্রী ধারন ক্ষমতা আছে।
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক আমির বলেন, ‘দ্বিতীয় বারের মতো প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ঘুরতে এসেছি, খুব আনন্দ লাগছে। আমাদের দলে ২০ জন সদস্য রয়েছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মামুনুর হাসান বলেন,‘পরিবারের ১১ সদস্যকে নিয়ে সময় কাটানোর পাশাপাশি সমুদ্রস্নানের জন্য সেন্টমার্টিনে যাচ্ছি। আশা করি ভ্রমণ আনন্দদায়ক হবে।’
কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা পযটক আবদুল হামিদ বলেন, পরিবারের পাঁচজন সদস্য নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসি।সেখানে জানতে পারলাম আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যাওযা যাবে। তাই দেরী না করে টিকেট সংগ্রহ করে সেন্টমাটিন বেড়াতে যাচ্ছি।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আজ সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মানুষের মনে ঈদের আনন্দ লক্ষ করা যাচ্ছে।পযটন মৌসুমের শুরুর দিন টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়াই দ্বীপে এ উৎসব আমেজ লেগেছে।অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ও কটেজে সাজ সাজ রব।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনানা চৌধুরী জানান, বুধবার সকালে ওই পর্যটকবাহী জাহাজে করে ৫০০ এর বেশি ভ্রমণকারী সেন্টমার্টিন দ্বীপে রওনা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাহাজগুলো চলাচল শুরু করেছে। পর্যটকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।
সাগর উত্তাল হওয়ার পাশাপাশি কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কায় দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি। পরে ১৮ মার্চ থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়।ওই সময় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, আটলান্টিক,শহীদ আব্দুস সালাম, এমভি পারিজাত, এমভি রাজ হংস, সুকান্ত বাবু, এমভি বে ক্রুজ এবং এমভি বার আউলিয়া জাহাজ চলাচল করত। “বিশ্ব পযটন দিবস” উদযাপন উপলক্ষ্য প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় টেকনাফ-সেন্ট মাটিন নৌপথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদানের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই সূত্র ধরে,পরীক্ষামূলকভাবে এক সপ্তাহের জন্য একটি জাহাজকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।