ময়মনসিংহের নান্দাইলে চরবেতাগৈর ইউনিয়নের আনোয়রুল হোসেন খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সরকারি পাঠ্যপুস্তক বিক্রির অভিযাগ প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। পিকআপ ভর্তি বই আটক করেছে স্থানীয় লোকজন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা প্রচারের পর ক্ষুব্ধ লোকজন প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক আটকে দিয়ে বইসহ পিকআপ জব্দ করে প্রশাসনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কৃষ্ণ পাল ও নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ।
এ সময় ৪ হাজার ২৯টি সরকারি বই এবং পরীক্ষার খাতা জব্দ করা হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক আসাদ উল্লাহ বইগুলো বুঝে নেন এবং বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় উপজেলা শিক্ষা অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে ২০১৮ সনের ১০টি, ২০১৯ সনের ৩টি, ২০২০ সনের ১৩০ টি, ২০২১ সনের ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীর ২০৩১টি, ২০২২ সনের ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীর ১৭৭৩টি এবং ২০২৩ সনের ৮২টি বই উদ্ধর করা হয়। ওই সময় বই আটকের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আনোয়রুল হোসেন খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে শত শত মানুষের ভীড় জমায়েত হয়। এলাকার লোকজন প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবি করে ’বই চোর বই চোর- প্রধান শিক্ষক বই চোর’, বিচার চাই বিচার চাই স্লোগান দিতে থাকে। স্থানীয় এবং প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিন বিদ্যালয়টি বন্ধ ছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিজে উপস্থিত থেকে বইগুলো বিক্রি করেন। এসময় বিদ্যালয়ের মাঠে দুইটি পিকআপ প্রবেশ করে। একটি পিকআপে বই উঠিয়ে তা ত্রিপল দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন তা আটকে দেন। এতে পিকআপ ভর্তি নতুন পাঠ্য বই দেখতে পান তারা।
স্থানীয় চরবেতাগৈর ইউপি আনসার-ভিডিপির কমান্ডার মো.কাজিম উদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ এবং সহকারী শিক্ষক মাওলানা নাজিম উদ্দিন এই দুজনে বই বিক্রি করছে। বই পিকআপে করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি তা আটক করি। এসময় আমারে ২০ হাজার টাকা সাধছে। পরে আমি এ ঘটনা উপজেলা প্রশাসনকে জানাই। বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র জানান, আমরা বই চাইলে কয় বই নাই। অথচ আজ পিকআপ ভর্তি বই আমরা আটক করছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ পাঠ্য বই বিক্রি করার কথা স্বীকার করে বলেন, ১৬ হাজার টাকার বই এবং খাতা বিক্রি করা হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি অবগত হয়েছি। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।