ক্লুলেস হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন

চাঁদপুরে চালককে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাই

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুর সদরের গুনরাজদী এলাকার অটোরিকশা চালক মো. দুলালকে (৫৩) নির্জন এলাকায় নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে প্রধান আসামি মো. শরীফ মাঝি।

এ হত্যার ১৪দিনের মাথায় ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করার বিষয়টি গনমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার((২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদেরকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর অটোরিকশা চালক দুলাল খুনের ঘটনায় পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তি এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিঃ রাত ১১টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে ভিকটিম  মো. দুলাল(৫৩)কে বয়স্ক দেখে তার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি চুরি করার উদ্দেশ্য সদর উপজেলা ল²ীপুর ইউনিয়নের জনকল্যাণ বাজারে যাবার জন্য যাত্রী হিসেবে রিকশাটি ভাড়া করে।

আসামি শরীফ গন্তব্যে যাওয়ার পূর্বে মসজিদের পাশ হতে একটি ইট নিয়ে রিকশায় ওঠে। চালক গাড়ি নিয়ে রঘুনাথপুর ইয়াকুব বেপারী বাড়ির নির্জনস্থানে পৌঁছলে শরীফ চালক দুলালকে রিকশা থামাতে বলে এবং সাথে সাথে ওই ইটটি দিয়ে তাকে পিছন থেকে মাথায় দুইবার আঘাত করলে সে রিকশা থেকে পড়ে যায়। তখন ঘাতক শরীফ রিকশা হতে নেমে চালকের মাথায় আরো দুইবার আঘাত করে মাথা থেতলে দিয়ে মৃত্য নিশ্চিত করে। পার্শ্ববর্তী জলাশয় মরদেহটি ফেলে নিজেই রিকশা চালিয়ে জনকল্যাণ বাজার হয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গোবিন্দিয়া রাজার হাটে চলে যায়।

চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামি মোঃ শরীফ মাঝিকে বুধবার সন্ধ্যায় সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ইচলী এলাকা থেকে আটক করে।

শরীফ মাঝি চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দিয়া গ্রামের রাজার হাট রাস্তার মাথা লতিফ মাঝি বাড়ীর হাবিবুর রহমান মাঝির ছেলে।

আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাড়ির পুকুর থেকে অটোরিকশার বিভিন্ন খন্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে হত্যার ঘটনায় অটোরিকশা চালক দুলালের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার ভিত্তিতে মডেল থানা পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, চাঁদপুর সদর সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ, মোহাম্মদ শেখ মুহসীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার তত্ত¡াবধানে  মামলার তদন্তকারী অফিসার রাজীব শর্মা, পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র), ইনচার্জ, পুরান বাজার ফাঁড়ীসহ চাঁদপুর সদর মডেল থানার একটি চৌকস দল মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে আটকে দায়িত্ব পালন করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুরের পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজীব শর্মা বলেন, রিক্সা চালানোর টাকাতেই সংসার চালাতেন মো. দুলাল। তার বাবার নাম মৃত রশিদ হাওলাদার।  তিনি শহরের গুনরাজদী জনৈক কাওসারের বাড়ির ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তার পরিবারে আছে স্ত্রী কোহিনুর বেগম, এক ছেলে নাহিদ ও সুরমা, পারভীন, সাদিয়া ও সোনিয়া নামে আরো ৪ কন্যা সন্তান। এছাড়াও মুক্তা নামে আরও এক কন্যা সন্তান মারা গেছে। খুনীকে শনাক্ত করতে পারায় এই পরিবারের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।