বীরগঞ্জে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় মাল্টা চাষে সফলতা

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

  বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুুরের বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও চাষিদের আগ্রহ সৃষ্টির মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাল্টা চাষের নীরব বিপ্লব ঘটেছে। এ উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ২৫০ টি  মাল্টা বাগান ও কৃষকদের পতিত জমিতে লাগানো গাছে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাল্টা চাষিদের লাভ দেখে অন্য কৃষকরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম আমাদের প্রতিনিধি মো. সিদ্দিক হোসেনকে জানান, গত ৫ বছর পূর্বে এ উপজেলার কৃষকদের উচ্চ মূল্যের ফল-ফসল আবাদে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্য পরীক্ষামূলকভাবে মাল্টা চাষ শুরু করা হয়। এ উপজেলার প্রায় সর্বত্র এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় তিনি কৃষকদের মাল্টা বাগান তৈরির প্রতি উৎসাহিত করেন। একই সাথে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে মাল্টা চারা ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে কয়েক বছরের মধ্যে চাষীদের মাঝে প্রায়  ২৫০ টি মাল্টা বাগান প্রস্তুত করতে সহায়তা করা হয়। তাদের সাফল্য দেখে ব্যক্তি উদ্যোগে চাষিরা আরো মাল্টা বাগান তৈরি কার্যক্রম শুরু করেছেন।

এছাড়া পতিত জমি ও বাড়ির ছাদে অনেকে মাল্টা চাষ করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মাল্টার বাগান রয়েছে।  মাল্টার চারা রোপণের পর প্রথম বছরই মাল্টা ফল ধরতে শুরু করে। মাল্টা গাছে চারার পরিচর্যা এবং গাছের চাহিদা অনুযায়ী গোবর জৈব এবং কিছুটা রাসায়নিক সার নিয়ম মাফিক প্রয়োগ করা হয়। এভাবেই মাল্টা বাগানের সৃনজকৃত চারাগাছগুলো খুব সহজেই স্বল্প সময়ে বড় হয় এবং ফল আসে ওই চারাগাছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র থেকে জানা যায়, গত ৫ বছর পূর্বে বীরগঞ্জ উপজেলায় মাল্টার কোনো চাষ না হলেও বর্তমানে এই উপজেলার ৮০০ একর জমির ওপর ২৫০ টি মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের চাউলিয়া গ্রামের মো. আবু তাহের, মো. বাবুল হোসেন, মো. আহমেদ আলী, মো. আবুল কালাম, সাতোর ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া গ্রামের মো. আব্দুস সাওার, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. নুরনবী, প্রাননগর গ্রামের মো. আ. মালেক, মো. জুয়েলসহ আরো অনেকে জানান, কৃষি বিভাগের আহবানে সাড়া দিয়ে তারা গত ৪ বছর পূর্বে ২৫০টি মাল্টা চারা রোপণ করেন। দুবছর পর ফল ধরতে শুরু করে এবং বর্তমানে প্রতিটি গাছে গড়ে ৬০-৭০ কেজি হারে মাল্টা ধরেছে। অন্যান্য বাগানেও এবার মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগান থেকে বিভিন্ন এলাকার ফল ব্যবসায়ীরা  তিন  হাজার  টাকা মণ দরে মাল্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

বাগান মালিকরা আরো বলেন, পরিচর্যা খরচ বাদে মাল্টা বাগান থেকে এবার  ভালো  মুনাফা অর্জন হয়েছে। এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার মাল্টা অধিক সুস্বাদু এবং আকারেও বড় হচ্ছে। চাষিদের অধিক লাভ ও সাফল্য দেখে কৃষকরা নতুন নতুন বাগান তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কৃষকদের সার্বিক সহায়তার জন্য বীরগঞ্জ  উপজেলা কৃষি  অফিসার কৃষিবিদ মোঃ শরিফুল ইসলাম  এবং মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে কৃষকদের কাজ করতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।দিনাজপুর জেলার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া  জানান, জেলার  মাল্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কৃষি বিভাগ উপজেলাগুলোতে কৃষকদের মাল্টা চাষে আগ্রহী করতে কৃষি মাঠ সমাবেশ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানান ।