নেত্রকোণায় বিদ্যূৎ সচিবের মতবিনিময় সভা
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:২১ | অনলাইন সংস্করণ
নেত্রকোণা প্রতিনিধি
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যূৎ সরবরাহে সমস্যাদি চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের উপায় খোঁজতে নেত্রকোণায় পল্লী বিদ্যূৎ সমিতির (পবিস) গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বিদ্যূৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যূৎ-বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) তানিয়া খান। পবিসের বারহাট্টা জোনাল অফিসের আয়োজনে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ৮টার দিকে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে বিদ্যূৎ সম্পর্কিত যে কোন অভিযোগ বা সমস্যার কথা বলার জন্য উপস্থিত গ্রাহকগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ সময় অনেকেই বিদ্যূতের ঘনঘন আসা-যাওয়া ও বিপর্যয়কর লোডশেডিং সম্পর্কে কথা বলেন। তারা বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ছেলে-মেয়েরা ঠিকমত পড়া-লিখা করতে পারছে না। জেলা-উপজেলার প্রতিটি হাটবাজারে অনেক শিক্ষিত উদ্যোক্তার সৃষ্ঠি হয়েছে। তারা পিতা-মাতার সম্পদ বিক্রয় বা অন্য কোন উৎস্য থেকে ঋণ নিয়ে কম্পিউটার কিনে কম্পিউটার কম্পোজ ও অনলাইন অন্যান্য সেবাদানের কাজ করে থাকে। বিদ্যূতের রাত-দিন দীর্ঘমেয়াদে লোডশেডিংয়ের কারণে এসব উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েছে। আতাউর রহমান সুমন ও মো. শাহ আলম নামের দুইজন গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারদেরও ঘোষ দিতে হয়। টাকা না দিলে তারা গ্রাহকদের ভোগান্তিতে ফেলে। এ ছাড়াও বিভিন্ন গ্রাহক বিদ্যূৎ সম্পর্কে তাদের না না সমস্যা ও অভিযোগ তুলে ধরেন।
জবাবে সভার প্রধান অতিথি অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) তানিয়া খান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিদ্যূৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তারই নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায় দক্ষিণ এশিয়ায় শতভাগ বিদ্যুৎতের আলোয় আলোকিত একমাত্র দেশ বাংলাদেশ। তার সদিচ্ছার কারণেই শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যূৎ- এই শ্লোগান বাস্তবে রূপ নিয়েছে। কিছু দূর্গম পার্বত্য এলাকা ব্যতীত দেশেরে ৯৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ এলাকায় ঘরে ঘরে বিদ্যূৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধা সৃষ্ঠির কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষা, কৃষি, দৈনন্দিন কাজে প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটেছে। হাসি ফুটেছে সকলস্তরের মানুষের মুখে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ সবাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছিলেন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্ঠি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উপকরণ গ্যাস ও জ্বালানী তেলের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ডলারের সঙ্কটের কারণেও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিভিন্ন উন্নত দেশেও বিদ্যুতের জন্য হাহাকার চলছে। বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ বিভাগকে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। চলমান লোডশেডিং মোকাবেলায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গাড়ী নিয়ে ছুটাছুটি না করার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন। লোডশেডিংসহ বিদ্যূৎ সম্পর্কিত সকল সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সকলকে ধৈর্যধারণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় পবিসের বারহাট্টা জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান খান সভাপতিত্ব করেন। তারই সঞ্চালনা সভায় অন্যদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমান, পবিস নেত্রকোণার জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার সরকার, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি, সহিকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফায়জুর রহমান, আওয়ামীলীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর আক্তার শায়লা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ আব্দুল কাদের, ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসকাবের সাংগঠণিক সম্পাদক ফেরদৌস আহমাদ বাবুল, বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আওয়ামীলীগ নেতা আছমত মোল্লা, আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান সুমন, আওয়ামীলীগ নেতা শাহিনুর রহমান, পবিসের এলাকা পরিচালক সৈয়দ মো. মাকুসুল হক, গ্রাহক রমেন্দ্র নারায়ন সরকার রনু প্রমুখ।