আফজালেই আস্থা নিকলী-বাজিতপুরের মানুষের

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ

  কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনটি একসময় বিএনপির দুর্গ হিসাবে খ্যাত থাকলেও বর্তমার সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের হাত ধরে এখন আওয়ামী লীগের দুর্গ বললেও ভুল হবেনা। আওয়ামী লীগের বর্তমান চলমান ক্ষমতা টানা তিনবার। এ আসনেও টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন।

তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে গত ১৪ বছরে বদলে গেছে এক সময়ের অবহেলিত কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত জনপদ নিকলী-বাজিতপুরবাসীর জীবনমান। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শত বছরের নদী ভাঙ্গন থেকে হাওরের দ্বীপ গ্রামগুলোকে স্থায়ীভাবে রক্ষাসহ শতভাগ বিদ্যুতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে আর্থসামাজিক ব্যাবস্থার আমূল-পরিবর্তন হওয়ায় টানা তিনবারের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ স্থানীয়রা।

১৯৯০ সনে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সনের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০০১ সনের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টানা তিনবার কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনটি ছিলো বিএনপির দখলে।

এরপর ২০০৮ সনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত আফজাল হোসেন। পরে ২০১৪ সনে দশম ও ২০১৮ সনে একাদশ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা তিনবার কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

দশ কিলোমিটার হাওরের বুক চিরে বয়ে চলা সারা বছর চলাচল উপযোগী প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ সড়কটি কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে পাশের করিমগঞ্জ উপজেলা হয়ে সরাসরি জেলা শহরের সাথে। ২০০৯ সালের আগে, বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে পায়ে হেটে এ পথে করিমগঞ্জ উপজেলা হয়ে জেলা শহরে যেতো নিকলীর মানুষ। এখন এ সড়কে ছুটে চলে সাঁই সাঁই গাড়ি। শুধু এ সড়কটি নয়, কিশোরগঞ্জ-৫ সংসদীয় আসনের নিকলী এবং বাজিতপুর উপজেলায় নির্মান হয়েছে ছোট-বড় এমন অসংখ্য সড়ক। এক সময়ের অবহেলিত এ জনপদের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষার উন্নয়নসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হওয়ায় বেড়েছে কর্মসংস্থান।

এছাড়াও নিকলী-বাজিতপুর হাওরাঞ্চলের কয়েকটি দ্বীপ গ্রামের শত বছরের নদী ভাঙ্গনের অবসান হচ্ছে ১৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে। এমন খুশির খবরে নিজ গ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন সব হারিয়ে নিঃস্ব নদী ভাঙ্গনের শিকার এ অঞ্চলের মানুষেরা। এ দুই উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। গৃহহীনদের আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী নিবাস দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যে এ দুই উপজেলাকে গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করে, টানা তিনবারের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

বাজিতপুর উপজেলার পাটুলী গ্রামের করিম মিয়া বলেন, আমাদের অঞ্চলের ছোট বড় সকল রাস্তা এখন পাকা হয়েছে। ১৪ বছর আগে এসব রাস্তা কাঁচা ছিলো। এখন আর আমাদের এলাকায় বেকার নেই। সিএনজি, রিকশা চালিয়ে রোজগার করা খুব সহজ এখন। আমাদের এলাকার এমপি আফজাল হোসেন টানা তিনবার ক্ষমতায় থেকে আমাদের এলাকার উন্নয়ন করেছে। এর আগে এমন উন্নয়ন কেউ করেনি। আগামীতে আরও উন্নয়ন তিনিই করবেন, এমন আস্থা আছে আমাদের এমপি'র প্রতি।

নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ার খান চৌধুরী বলেন, আমাদের ছাতিরচর ইউনিয়নটি হাওরের বুকে ভাসমান দ্বীপ গ্রাম। এ ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা ঘোড়াউত্রা নদীটি আমাদের দুই'শ বছরের দুঃখ। এ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গন থেকে আমরা চিরতরে রক্ষা পাচ্ছি। এজন্য আমাদের সংসদ সদস্য ও সরকারের দায়িত্বশীল সকলকের প্রতি এ ইউনিয়নের মানুষের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন বলেন, আমি ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অন্ধকার জনপদ নিকলী-বাজিতপুর গেলো ১৪ বছরে আলোকিত হয়েছে। এ এলাকার গ্রামগুলো ইতিমধ্যে শহরে পরিনত হতে যাচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটেছে এ অঞ্চলে। এই দুই উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, সড়ক ও জনপথ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের অন্যান্য দপ্তরের কয়েকশত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান এবং প্রস্তাবিত রয়েছে।