মতলব উত্তরে বাবু হত্যা মামলায় কাজী মিজান ফের জেল হাজতে
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৪:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা চাঞ্চল্যকর মোবারক হোসেন বাবু হত্যা মামলায় কাজী মিজানুর রহমানকে আবারও জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সকালে চাঁদপুর জেলার আমলী আদালত মতলব উত্তরের বিচারক নাজমুল হাসান চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার জামিন স্থগিতাদেশ করলে নিম্ন আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছিলো। জানা যায়, কাজী মিজান বিভিন্ন তথ্য গোপন করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলো।
মামলার বাদী আমির হোসেন কালু ও মামলার বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার আলোচিত যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন বাবু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি কাজী মিজানুর রহমান ওরফে কাজী মিজানকে উচ্চ আদালতের দেয়া জামিন ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ জামিনের স্থগিতাদেশ দেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকালে জামিন স্থগিতাদেশের সুপ্রিম কোর্টের কপি চাঁদপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবি। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জামিন ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিতের খবরে মঙ্গলবার হত্যা মামলার ধার্য্য তারিখে মামলার প্রধান আসামি কাজী মিজানুর রহমান আদালতে হাজির হননি।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে কাজী মিজান, কাজী মতিন ও কাজী হাবিব জামিন পেলে ওই দিনই মামলার বাদী ও নিহত বাবু’র ভাই আমির হোসেন কালু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের আদালত কাজী মিজানুর রহমানকে উচ্চ আদালতের দেয়া জামিনের ওপর ৮ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সেলিম মিয়া ও এডভোকেট আল আমিন উজ্জ্বল জানান, উচ্চ আদালতে তথ্য গোপন করে কাজী মিজান জামিনে বের হয়েছিলো। আমরা বাবু হত্যা মামলায় ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি।
এ বিষয়ে নিহত মোবারক হোসেন বাবু’র ভাই ও মামলার বাদী আমির হোসেন কালু বলেন, আমি ও আমার পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাকে মেরে ফেলার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মাথাভাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। এসময় মোহনপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাওয়ার পথে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্য কাজী মিজানের নির্দেশে মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এসময় যুবলীগ নেতা মোবারক হোসেন বাবুসহ ৫ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবুকে মৃত ঘোষণা করেন। ওইদিন রাতে মতলব উত্তর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পরদিন ১৮ জুন সকালে প্রধান আসামি কাজী মিজানুর রহমানকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এর আড়াই মাস পর গত ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে চাঁদপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান কাজী মিজানুর রহমান।