কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল একটি চক্র। এই সব দখলবাজ চক্রের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে কক্সবাজার পৌর প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এই অভিযান শুরু করা হয়।
অভিযানের প্রথম দিনে মাত্র দুই ঘন্টায় উচ্ছেদ করা হয়েছে শতাধিক স্থাপনা। একই সঙ্গে রাস্তায় অবৈধ পার্কিং করা অর্ধ-শত মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গনের কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ সড়ক হয়ে এই অভিযান শুরু করেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পৌর কর্তৃপক্ষ। অভিযানটি হাসপাতালের মোড় হয়ে ভোলাবাবুর পেট্টোলপাম্প, পুরাতন পান বাজার সড়ক, কৃষি অফিস সড়ক হয়ে প্রধান সড়কের ফজল মাকের্ট এলাকা গিয়ে শেষ করা হয় দেড় টার দিকে। দুই ঘন্টার অভিযানে ফুটপাত দখল করে স্থাপনা করে দোকান পরিচালনা করা শতাধিক স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হয়। একই সঙ্গে হাসপাতাল মোড়ের বেসরকারি ক্লিনিক সংলগ্ন সড়কে অবৈধভাবে পাকিং করা অর্ধ শত মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
অভিযানে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার সালাম, প্যানেল মেয়র-১ সালাউদ্দিন সেতু, কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশ, মিজানুর রহমান ও এহেসান উল্লাহ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত দুই দিন ধরে কক্সবাজার শহরের মাইকিং করে সকল প্রকার অবৈধ দখলদারদের স্বেচ্ছায় দখল ছেড়ে দেয়ার আহবান-অনুরোধ জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছিল। তারপর সরিয়ে না নেয়ায় এই অভিযান শুরু হয়। অভিযানের প্রথম দিন অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হাসপাতাল এলাকাকে প্রধান্য দেয়া হয়েছে। এখানে প্রতিদিন অসংখ্যা রোগী আসা-যাওয়া। চিকিৎসা নিতে আসা মূমুর্ষ রোগীও আসেন। এই সড়কটির উভয় পাশের ফুটপাত দখল করে দোকান, গাড়ি পাকিং, এ্যাম্বুলেন্স পাকিং এর কারণে সাধারণ মানুষও চলাচল করতে পারে না। এসব সরিয়ে নেয়া হল।
এই অভিযান অব্যাহত রাখা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, পৌরসভার সকল নালা-নর্দমা, জমিও দখল মুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে উচ্ছেদ করার পর নতুন করে যাতে দখল না হয় তার জন্য ৩ টি মনিটরিং কমিটি করা হয়ে। যখন দখল তখন উচ্ছেদ চালানো হবে। প্রয়োজনের সন্ধ্যা ও রাতে চলবে এ অভিযান।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার সালাম জানান, অভিযানে জব্দ করা মোটর সাইকেল সংশ্লিষ্ট আইনে জরিমানা প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে পুণ:রায় একই অপরাধ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, দীর্ঘ পরে হলেও পৌর প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পৌরবাসি।
অভিযান চলাকালিন সময় হাসপাতাল সড়কের গফুর উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, এটি রোগীদের আসা যাওয়ার সড়ক। এখানে সকাল সন্ধ্যায় ফুটপাত জুড়ে ভ্যান সহ নানা দোকান বসানো হয়। একই সঙ্গে মোটর সাইকেলের অঘোষিত পাকিং এ পরিণত হয়। যাতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। এ উচ্ছেদ হওয়ার পর যেন পুনরায় দখল নিতে না পারে তারজন্য ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানান তিনি।
হেলাল উদ্দিন নামের এক যুবক জানান, এ অভিযান শহর জুড়ে চালানো প্রয়োজন। প্রধান সড়ক সহ সকল ফুটপাত হকারের দখলে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।