প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙেছে ৪টি কালভার্ট, শহর থেকে বিচ্ছিন্ন ১০ গ্রামের মানুষ
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:১৬ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ৫০ বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ টানা বৃষ্টিতে কালভার্ট ভেঙে শহরের সাথে ১০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে। উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের উচাখিলা বাজার থেকে মরিচার গ্রাম হয়ে ফাতেমা নগর(কালিবাজার) পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কে ৪ টি কালভার্ট ভেঙে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে ১০ গ্রামের প্রায় ১৮ হাজার মানুষ ।
সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মরিচারচর বালুর ঘাট মুন্সি বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে ভেঙে পড়ে আছে কালভার্ট। এলাকাবাসী জানান, গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রবল স্রোতে কালভার্টের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার কারণেই কালভার্টটি ভেঙে পড়ে যায় । এখান থেকে উচাখিলা বাজারের দিকে একটু সামনে এগোতেই বটতলা মোড় সংলগ্ন আরও একটি কালভার্ট ভেঙে সড়কের দুই পাশ কালভার্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতেই উচাখিলা মরিচারচর, চরআলগী, টান পাড়া, টান মলামারি, মাইজ পাড়া ও হাশের আলগীসহ ১০ গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বিছিন্ন হয়েছে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ঈশ্বরগঞ্জ, উচাখিলা, রাজিবপুর এবং ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে ত্রিশাল, কালীবাজার ও ময়মনসিংহে দৈনিক ১০ হাজারেরও বেশি লোক যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে।
চর আলগী গ্রামের মো. আবুল কালাম(৫৫) বলেন, এই রাস্তা দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার লোক,৫০০ থেকে ৬০০ শত অটোরিকশা, সিএনজিসহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যাতায়াত করে।আমরা উচাখিলা ও ঈশ্বরগঞ্জ বাজারে কৃষি পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। রাস্তা ও ব্রীজ ভেঙে পরায় আমার খুব খারাপ অবস্থায় আছি। আশেপাশের ১০ গ্রামের প্রায় ১৮ হাজার লোক এতে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। সরকারের কাছে দাবি আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কালভার্টগুলো যেন দ্রুত মেরামত করে দেয়।
স্থানীয় আমিনুল হক(১৮) বলেন, প্রবল স্রোতে কালভার্টের দুইপাশ থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। এছাড়া কালভার্টগুলো দীর্ঘদিনের পুরোনো যেকারণে মাটি সরে যাওয়াতে ভেঙে গেছে। এতে আমাদের মতো ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী চরম বিপাকে পড়েছে।
মরিচার গ্রামের মাহাবুব আলম নামের এক ব্যবসায়ী জানান, শনিবার থেকে বৃষ্টি কমায় কিছু কিছু স্থানে পানি নামছে। যেখানে পানি নামছে, সেখানে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন। আঞ্চলিক সড়ক, কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ, ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভেসে গেছে বীজতলা, ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিমকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তৌহিদ আহমেদ বলেন, বৃষ্টিতে সারা দেশেই অনেক স্থাপন ভেঙে গেছে। হেডকোয়ার্টারে নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন এলাকার ভেঙে যাওয়া স্থাপনার লিস্টিং চলছে। সেগুলো দ্রুত মেরামত করা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, দুর্ভোগ নিরশনের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করা যায় কি না এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে (এলজিইডি) পাঠানো হবে।