কক্সবাজারের পেকুয়ায় চাঞ্চল্যকর আবু ছৈয়দকে হত্যা করে পা কেটে নেয়ার মামলার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারি নেজামুল ইসলাম মোজাহিদসহ অভিযুক্ত ৩ জন কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫। এই নেজামুল ইসলাম মোজাহিদ পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াশিমের ব্যক্তিগত সহকারি। এই নিয়ে মামলাটির ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ৩ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারস্থ র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের আফজালিয়াপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে নেজামুল ইসলাম মুজাহিদ (২৮), একই এলাকার মৃত নুরুন্নবী’র ছেলে আমিরুজ্জামান (২৮) ও মৃত নুরুন্নবী’র ছেলে জামিল ইব্রাহিম ছোটন (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত ১০ অক্টোবর বিকেলে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু ছৈয়দ’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাসহ তার একটি পা কেটে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এছাড়াও এ ঘটনায় আবু ছৈয়দের স্ত্রীসহ চারজন গুরুতর আহত হন। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আসামীদের গ্রেপ্তার ও হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকান্ডের পর দিন ১১ অক্টোবর নিহতের ছেলে ছৈয়দ মোহাম্মদ ইমন বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত হওয়া মাত্রই র্যাব-১৫ ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।”
লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে পেকুয়ার আফজালিয়াপাড়ায় আত্মগোপনে থাকা মামলার ২ নম্বর আসামী ও অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী নেজামুল ইসলাম মোজাহিদ’সহ ০৩ জন’কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন, “গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৩ জন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেন এবং ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, ঘটনার ৩ দিন আগে হত্যাকারীরা নিজেদের মধ্যে গোপন সভা করে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। সে মোতাবেক গত ১০ অক্টোবর বিকেল ৩টায় আবু ছৈয়দ তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সেখানে হানা দেন। একপর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু ছৈয়দ’কে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে আবু ছৈয়দ খাটের নিচে ঢুকে পড়লে সেখান থেকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হাত-পা চেপে ধরে কোপানোর পর মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যান। এ সময় আবু ছৈয়দের ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যান তারা। এঘটনায় ২৫ জনের সশস্ত্র একটি দল অংশ নেন। এসময় স্থানীয় লোকজনদের অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি প্রদান করেন তারা।”
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে থানায় হস্তান্তর করা হবে এবং পলাতক অন্যান্য আসামিদেরকে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।