মালয়েশিয়ায় ৪ বছর ধরে নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান চান পিতা-মাতা

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

  পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার একটি গ্রামের সন্তান মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর প্রায় ৪ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ছেলের খোঁজে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পিতা-মাতা। অচল সংসারকে সচল করতে একমাত্র ছেলে মিরাজুল মন্ডলকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু সংসারের চাকা সচল তো দূরের কথা ছেলেকে হারিয়ে আরও নিঃস্ব বাবা-মা।

গতকাল রবিবার পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন মিরাজুলের বাবা দুলাল হোসেন ও মা রিতা খাতুন।

সংবাদ সম্মেলনে দুলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঢাকার মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় যায় ছেলে মিরাজুল মন্ডল (৩২)। বিদেশ যাওয়ার পর প্রায় দেড় বছর ভালোই চলছিল। এরপর হঠাৎ একদিন ছেলে মিরাজুল তার রুমমেট মিলন, ফরহাদ এবং এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপনের সঙ্গে বিরোধের কথা জানায়। তারা বিভিন্ন সময় আমার ছেলেকে হুমকি-ধামকি দিতো, টাকা-পয়সা জোর করে কেড়ে নিতো। এরই এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল মজনু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমার ছেলের সন্ধান দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে কিন্তু আমার ছেলের কোনো সন্ধ্যান দিতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, ‘এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল মজনু আমাকে সমঝোতার জন্য অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে মৃত অথবা জীবিত পাওয়ার দাবি জানাই। এরপর থেকে তারা আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এবং মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করি। এরপরও আমি কোনো প্রতীকার পাচ্ছি না। আমরা গরীব ও অসহায় পরিবার। ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে এবং স্ত্রীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে জমিজমা বিক্রি করে পথে বসে  গেছি। ছেলের সন্ধান পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।

মা রিতা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আমার সন্তানের সন্ধ্যান চাই জীবিত অথবা মৃত অবস্থায়। ছেরের নিখোঁজের সঠিক কারণ জানতে চাই। আমরা গবির মানুষ, অনেক জায়গায় ঘুরছি, আরও কোথায় গেলে আমার সন্তানের খোঁজ পাবো? আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাই।  

এবিষয়ে অভিযুক্ত ঢাকার মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর স্থানীয় এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপন (০১৭১০০৩৭৬৪৬) এবং দালাল মজনু বিশ্বাসের (০১৯২১৮৮৪০৪৯) সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।