ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘটনায় জড়িত রাঘববোয়ালদের চিহ্নিত করার দাবি

উখিয়ায় সরকারি চাল জব্দের ঘটনা আড়াঁলের চেষ্টা, অবশেষে মামলা

উখিয়ায় সরকারি চাল জব্দের ঘটনা আড়াঁলের চেষ্টা, অবশেষে মামলা

কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ চৌধুরীপাড়ায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভি ডাব্লিউ বি) প্রকল্পের সরকারি ১১১ বস্তায় তিন হাজার ৩৩০ কেজি চাল জব্দের ঘটনা আড়াঁলের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। চাল জব্দের তিনদিনের মাথায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে ১৯৭২ সালের বিশেষ আইনে উখিয়া থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। র‍্যাব-১৫ এ কর্মরত এসআই মংকু চাকমা বাদি হয়ে করা মামলায় একজনকে প্রত্যক্ষ এবং চার-পাঁচ জনকে পরোক্ষ আসামী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।

আসামীরা হলেন, উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমা চৌধুরী পাড়ার (৯নং ওয়ার্ড) মোজাহের কোম্পানীর ছেলে সিরাজুল ইসলামসহ অজ্ঞাতানামা আরো ৪/৫ জনকে পলাতক আসামী করা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, রবিবার রাতে ১৭৪/২৩ নম্বর সিসি মূলে এসআই রাসেল হোসেন, এএসআই জাহাঙ্গীর আলম, এএসআই ফরিদুর রেজা, নায়েক জাকির হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্স র‍্যাব-১৫

কক্সবাজার নিয়মিত টহলে বের হয়। টহলকালে উখিয়া বাজার এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদে খবর আসে, উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউপির রুমকা চৌধুরী পাড়াই মোজাহের কোম্পানীর আধাপাকা বসতঘরে সরকারী ভাবে ভিজিডি কর্মসূচির বিপুল পরিমাণ চাউল অবৈধ মজুদ করা হয়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আদেশ পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উখিয়া সালেহ আহমেদসহ রাত সোয়া ১২টায় ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। মোজাহের কোম্পানীর আধাপাকা বসতঘরের সামনে পৌঁছালে র‍্যাবের উপস্থিতি টের মজুদকারিরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উপস্থিত লোকজনের সামনে পলাতক আসামীর ঘর তল্লাশী করে তার ঘরের বারান্দায় থাকা ১১১ বস্তা মুখ বন্ধ খাদ্য অধিদপ্তরের আতপ চাউল ২৮টি প্লাস্টিকের বস্তা, ৮৩টি চটের বস্তা উদ্ধার হয়। প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি করে ১১১ বস্তায় ৩ হাজার ৩৩০ কেজি চাউল উদ্ধার করা হয়। এসআই রাসেল হোসেন রাত সোয়া একটার দিকে আলামতের জব্দ তালিকা করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উখিয়ার নির্দেশে জব্দ তালিকা মূলে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য পরিদর্শক উখিয়া কক্সবাজারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

আরো উল্লেখ করা হয়, এজাহার নামীয় আসামী তাহার সহযোগী অজ্ঞাতানামা আসামীদের যোগসাজসে সরকারী ভাবে ভিজিডি কর্মসূচির বিপুল পরিমাণ আতপ চাউল অবৈধ ভাবে সংগ্রহ করত অধিক মুনাফায় কালো বাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এর ২৫ ও ২৫-ডি ধারায় অপরাধ করেছে। পলাতক আসামী গ্রেফতার, মূল উৎস উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে অন্যান্য এলাকায় অভিযান ও উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে এজাহার দিতে বিলম্ব হয়েছে। মামলাটি তদন্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, উখিয়া থানার এসআই মনোজ কান্তি কুরীকে।

উল্লেখ্য, রবিবার রাতে তিনঘন্টা অভিযানের পর হলদিয়া পালংয়ের রুমকা চৌধুরী পাড়া থেকে ১১১ বস্তা সরকারি চাউল জব্দ করা হয়।এর একদিন পর র‍্যাব-১৫ নিয়ম মতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিলেও, চাল জব্দের ঘটনায় তথ্য আড়াল করা হয়। মামলায় মোজাহের কোম্পানির বাড়ির কথা উল্লেখ করা হলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই এলাকায় পরিত্যক্ত ভাবে চাল গুলো পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দায়সারা ভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়। এতে চিহ্নিত চাল চোরদের বাঁচানোর চেষ্টা চলেছে বলে সবাই সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্পের চাল হওয়া বিষয়টি 'টক অব দ্যা ডিস্ট্রিকে' পরিণত হয়।

অপরদিকে, মামলাটি স্থানীয় থানার অফিসার দিয়ে তদন্ত হলে সরকারি চাল চুরিতে জড়িত প্রভাবশালীরা প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে ধারণা করছেন সচেতনমহল। তাই সিআইডি বা অন্যকোন স্বতন্ত্র সংস্থাকে মামলাটি তদন্তে দায়িত্ব দেয়া হলে আসল চোরদের মুখোশ উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করেন তারা। তবে, উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা স্পর্শকাতর একটি বিষয় যেহেতু- প্রভাবমুক্ত ভাবেই তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে।

মামলা,দাবি,চিহ্নিত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত