ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুর অঞ্চলে বাড়ছে সুপারি চাষ

রংপুর অঞ্চলে বাড়ছে সুপারি চাষ

রংপুর অঞ্চলে চাহিদা বাড়ায় বাড়ছে সুপারি চাষ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছর এ জেলায় মোট ২৫৬ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৫৯০ মেট্রিক টন সুপারি। ২০২২ সালে উৎপাদন হয়েছিল এক হাজার ৮০০ মেট্রিক টন সুপারি। গতবছরের তুলনায় সুপারির দাম বেড়েছে দেড়গুণ ।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান- রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ এলাকায় প্রচুর সুপারি চাষ হয়। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায়ও প্রচুর পরিমাণে সুপারির চাষ হয়ে থাকে। সুপারি গাছে তেমন কোনো যতœ নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এর কোনো ডালপালাও থাকে না। রংপুরের পৌর বাজার ও লালবাগ বাজারসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা ও ইউনয়ন পর্যায়ে সুপারির বাজার গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলনও বাড়ছে।

প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনা, ঝোপঝাড়, পুকুরপাড়, রাস্তার ধারসহ প্রায় সব জায়গায় সুপারি গাছ দেখা যায়। একবার লাগালে দীর্ঘদিন ফল দিয়ে থাকে এই গাছ। আর ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে তা মাটিতে পুঁতে রাখেন বা পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। পরে পচানো ঐ সুপারি বিক্রি করেন প্রায় দেড়গুণ দামে।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ছাড়াও গ্রামের মানুষের নিত্যদিনের খাবার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পান-সুপারি। তাছাড়া এ এলাকায় অতিথি আপ্যায়নের পর পান-সুপারি দেওয়া একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কৃষকরা জানান- চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই তিন মাসে গাছে সুপারি পাকতে শুরু করে। অপরদিকে, সুপারি গাছে নতুন করে ফুল ও ফল আসা শুরু হয়। বসতবাড়ির আশপাশে এবং উঁচু জমিতে চারা লাগানোর আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করে সুপারির গাছ। বছরে এক-দু’বার গোবর সার আর পানির সেচ দেওয়া ছাড়া আর তেমন কোনো বাড়তি পরিচর্যা করা লাগে না।

অনেক ব্যবসায়ী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারি কিনে তা মাটিতে পুঁতে রাখেন বা পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। পরে পানিতে পচানো ঐ সুপারি শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে বিক্রি করেন দেড়গুণ দামে। পীরগাছার পারুল ইউনিয়নের সফর উদ্দিন খান বলেন, আমার জমির আইল ও বাড়ির আশপাশে প্রায় শতাধিক সুপারি গাছ আছে। প্রতিবছর গাছে প্রচুর পরিমাণে সুপারি ধরে। খাওয়ার জন্য রেখে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেই। আয় হয় বেশ ভালো। সুপারি গাছ একবার লাগালে ১০-১৫ বছর ফল পাওয়া যায়। চাহিদা ভালো থাকায় সুপারি অধিক লাভে দ্রুত বিক্রি হয়। ছায়াযুক্ত জায়গাতেও সুপারি গাছ বড় হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, রংপুরের আবহাওয়া ও মাটি সুপারি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও সুপারি চাষাবাদে অনেক শিক্ষিত মানুষও এগিয়ে আসছেন এবং যথাসময়ে গাছের পরিচর্যা করছেন। এতেও উৎপাদন বাড়ছে। আশা করি ফলন আরো ভালো হবে।

চাষ,সুপারি,রংপুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত