কুমিল্লায় নিজ বাসায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আহত চিকিৎসক মারা গেছেন
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৪০ | অনলাইন সংস্করণ
কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নিজ বাসায় সন্ত্রাসীদের এলোপাতারি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জহিরুল হক দুই দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেছেন। কুমিল্লা নগরীর রেসকোর্স এলাকার সিলভার শাপলা টাওয়ার নামের একটি ভবন পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে গত শনিবার ডা. জহির ও তার স্ত্রী ফারহানা আফরিন হিমিকে ছুরিকাঘাত করে ও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে সন্ত্রাসীরা। তার এ অকাল মৃত্যুতে নগরীর চিকিৎসকসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। চিকিৎসক নেতারা ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের প্রয়াত নুরুল হকের ছেলে ডা. জহিরুল হক (৪৫)। তিনি নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন। গত শনিবার নগরীর রেসকোর্স এলাকার সিলভার শাপলা টাওয়ার পরিচালনা কমিটি নিয়ে তার সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান ওই ভবনের কতিপয় ব্যক্তি। একপর্যায়ে ওই ভবনের ৮ তলায় ডা. জহিরকে এলোপাতারি ছুরিকাঘাত করে ও দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এসময় তার স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডা. জহিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে তাকে রবিবার রাতে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে এ ঘটনার পর ডা. জহিরের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- ওই ভবনের সালাউদ্দিন মোর্শেদ ভূঁইয়া ওরফে পাপ্পু, তার স্ত্রী সুমী, ছেলে আরহাম ও আহনাফ, সিলভার ডেভেলপার্সের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ। পুলিশ মামলার প্রধান আসামি সালাউদ্দিন মোর্শেদ ভূঁইয়া ওরফে পাপ্পুকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এদিকে সোমবার ডা. জহিরের মৃত্যুর খবর কুমিল্লা নগরীতে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসক সমাজের মাঝে ক্ষোভ-হতাশার সৃষ্টি হয়। সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ডা. জহিরের মরদেহ কুমিল্লায় নিয়ে আসা হলে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। চিকিৎসকসহ নানান শ্রেণিপেশার মানুষ তার মরদেহ দেখতে বাড়িতে ভীড় জমান।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি ডা. আবদুল বাকী আনিস, সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, স্বাচিপ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. মোরশেদ আলমসহ চিকিৎসক নেতা ডা. একেএম আবদুস সেলিম, ডা. তৌফিকুন্নবী খান লিটনসহ নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেন এবং এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সোমবার কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ জানান, এজাহারনামীয় প্রধান আসামি সালাউদ্দিন মোর্শেদ ভূঁইয়া ওরফে পাপ্পুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।