নাটোরে বিয়ের দেনমোহর ৫টি গাছ 

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:০১ | অনলাইন সংস্করণ

  নাটোর প্রতিনিধি

সমাজে বিয়ের দেনমোহরের টাকা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের বিরোধে অনেক সময় বিয়ে ভেঙে যায়। দেনমোহরের জন্য অনেকের সংসার ভেঙ্গেও যায়। সেখানে নগদ টাকা বা স্বর্ণালংকার নয় দেনমোহর হিসেবে ৫টি ফলজ ও বনজ গাছ কণের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এলাকায় । এ ঘটনায় এলাকায় মধ্য বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) নাটোর শহরের উত্তরা গণভবন এলাকায় এমন এক বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নবদম্পতি সকলের প্রসংশায় ভাসছেন।

নাটোরের বাসিন্দা এম. আসলাম লিটনের একমাত্র মেয়ে সুকৃতি আদিত্যের সঙ্গে কুমিল্লার বাসিন্দা নাবিন আদনান বিয়ে সম্পন্ন হয়।

কণে আদিত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স এবং বর কুমিল্লার বাসিন্দা একই অনুষদের অংকন ও চিত্রায়ণ বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।  

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার নাটোর শহরের দিঘাপতিয়ায় উত্তরা  গণভবন এলাকার এম. আসলাম লিটনের একমাত্র মেয়ে সুকৃতি আদিত্যের সঙ্গে কুমিল্লার বাসিন্দা নাবিন আদনান বিয়ের দেনমোহর হিসেবে পাঁচটি ফলজ ও বনজ গাছ দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর কনে সুকৃতি আদিত্য ও বর নাবিন আদনান দেনমোহরের পাঁচটি গাছের চারা রোপন করেন। 

কনে সুকৃতি আদিত্য বলেন, বর্তমানে অনেক বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে টাকা ও গহনা নিয়ে থাকেন। আমি ভেবেছি আমি দেনমোহর হিসেবে কোনো অর্থ নেবো না। এখান থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। এ কারণে আমি বিয়েতে টাকা ও গহনার বদলে পরিবেশবান্ধব গাছ নিয়েছি। 

বর নাবিন আদনান বলেন, দেনমোহরের বিষয়টা নিরাপত্তা। আমার কাছে মনে হয়েছে নিরাপত্তার চাইতে পরিবেশের নিরাপত্তা বেশি জরুরী। এটা একটা প্রতীকী ব্যাপার। এর বাইরে বিশেষ কিছু নয়। প্রতীকী ব্যাপার হিসাবেই আমরা চর্চা করলাম যাতে আমরা পরিবেশ, 
প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে থাকতে পারি।
আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।

কনের বাবা এম. আসলাম লিটন জানান, আমার মেয়ে সুকৃতি আদিত্য সিন্ধান্ত নেয় সে মোহরানা নেবে না। নিলেও সে একটা টোকেন নিতে চায়। অভিভাবক হিসাবে তার সিন্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। মোহরানাটা মুল বিষয় নয় সম্পর্কটা মূল। দু’টি মানুষের হৃদয় মন এক হয় বিয়ের মধ্য দিয়ে। এই বন্ধনটাই আসল। কোন অর্থনৈতিক বা সম্পদের জায়গায় গিয়ে চুক্তিবন্ধ হওয়ার 

চাইতে আত্মার চুক্তিবন্ধ হওয়া বেশী জরুরী। সেই জায়গাটা আমার মেয়ে আদিত্য অনুভব করেছে। বাবা হিসাবে আমি গর্বিত আমার মেয়েরর জন্য।