চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় এক মসজিদের ভিতরে দিনের পর দিন শিশু শিক্ষার্থীদের বলৎকার করতেন মসজিদের ইমাম। ঘটনাটি জানাজানির পর লম্পট ওই ইমাম কাম হেফজ খানার পরিচালক শাহপুরী মাওলানা হারুন অর রশিদ পালিয়েছে ।
উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের কাঁঠালী বাদামতলী বায়তুন নূর জামে মসজিদের এ ঘটনা ঘটে। শাহপুরী মাওলানা হারুন অর রশিদ ওই মসজিদের খতিব, পেশ ইমাম ও মসজিদ সংশ্লিষ্ট মাদরাসার পরিচালক হিসেবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের কাঁঠালী বাদামতলী বাজারস্থ বায়তুন নূর জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নূরাণী ও হাফেজীয়া বিভাগে মোট ৪২ জন শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। এর মধ্যে হাফেজীয়া বিভাগে ২৩ জন শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআন মাজিদ মুখস্থ করতেছে। এ হাফেজিয়া বিভাগের একাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে বলৎকারের অভিযোগ উঠায় মসজিদের ইমাম মাওলানা. হাররুন অর রশিদ গত সোমবার রাত থেকে পলাতক আছেন।
মাদ্রারাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ঘটনার কতটুকু সত্য, তা তারা জানেন না। তবে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জানান, মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে বড় হুজুর তাদের সাথে খারাপ কাজ করতেন। এরপর সোমবার এশার নামাজের পর থেকে হুজরাখানা তালাবদ্ধ এবং হুজুর মাদরায় আসছেন না। বলৎকারের শিকার একটি পরিবারের সদস্যের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নাতি প্রায় সময় বলতো বড় হুজুর খারাপ কাজ করে বলতো। কিন্তু আমরা বিশ^াস করিনি।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার নাতি মাদরাসা থেকে বাড়িতে চলে আসে এবং বড় হুজুর তার সাথে খারাপ কাজ করছে উল্লেখ করে সে মাদরাসায় যাবেনা বলে আমাদের জানান। তার সাথে জিহাদ নামের অপর এক শিশুর সাথেও বড় হুজুর একই কাজ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ দিকে মাও. হারুন অর রশিদকে মসজিদ, মাদরাসা ও বাড়িতে খোঁজ করে না পাওয়ায় এবং ব্যবহৃত দুইটি মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মসজিদ ও মাদরাসার-তো দোষ নেই, এখানে ব্যক্তির সমস্যা। তাই সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে মসজিদ ও মাদরাসার দাতা পরিবারের একজন সদস্য বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আসায় সাময়িকভাবে তাকে মসজিদ ও মাদরাসায় আসতে নিষেধ করেছি। তিনি বলেন, এলাকার মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছি। কেউ যেন উত্তেজিত হয়ে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না করে। সবাই কথা রেখেছেন। আগামি শুক্রবার মিটিং আছে, ওই মিটিংয়ে তার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মসজিদ ও মাদরাসার সেক্রেটারী সিরাজ মৃধার মুঠোফোনে বলেন ্িবষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হেলাল পাটোয়ারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, লোকমুখে এবং এলাকাবাসীর মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। তবে ওই শিশুদের পরিবারের কেউ আমাকে জানায়নি।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। বিষয়টির সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।