ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চ, ১০ লাখ লোক সমাগমের পরিকল্পনা

নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চ, ১০ লাখ লোক সমাগমের পরিকল্পনা

বহুল প্রতিক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করতে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনকে ঘিরে চট্টগ্রাম সেজেছে নবরূপে। আনোয়ারা উপজেলায় কেইপিজেড মাঠে শনিবার হবে সুধী সমাবেশ। সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগমের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

এই লক্ষ্যে সপ্তাহজুড়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন নগর আওয়ামী লীগ,উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। ইতিমধ্যে সমাবেশকে স্মরণীয় করে রাখতে দলীয় নেতাকর্মীরা নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। সাজানো হচ্ছে সমাবেশের আশপাশের এলাকা। নগরের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কজুড়ে এখন তোরণের ছড়াছড়ি। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে সেজেছে নগরী। ঢাকা-চট্টগ্রামের প্রধান সড়ক ছাপিয়ে অলি-গলিতেও শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার-ব্যানার। বিশেষ করে পতেঙ্গা সড়ক ও শাহ আমানত সড়ক সেজেছে নতুন রূপে। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড, ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আউটার রিং রোড এবং টানেলের অপর প্রান্ত আনোয়ারা থেকে শাহ আমানত সেতু এলাকাসহ নগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

দলীয় নেতা কর্মীরা জানান,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই জনসভাকে ঘিরে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি কাড়তে কয়েক কোটি টাকার তোরণ, ব্যানার আর প্যানাফ্লেক্স নির্মাণ করেছেন দলটির নেতাকর্মী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। মাইকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এলইডি টিভি বসিয়ে দেখানো হচ্ছে উন্নয়নের স্থিরচিত্র। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. রেজাউল করিম চৌধুরীর উদ্যোগে নগরজুড়ে পাঁচ শতাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন, তোরণ শোভা পাচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরাও পাঁচ হাজারের বেশি ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়েছেন। এর বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও প্যানাফ্লেক্স, ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি টানেল পাড়ি দিয়ে আনোয়ারায় গিয়ে কোরিয়ান ইপিজেডের মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করেছে। ইতিমধ্যে জনসভার প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। মঞ্চসহ জনসভাস্থলের অবকাঠামোগত কাজ যুক্ত প্রায় দু’শ শ্রমিক। বসে নেই দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতাকে বরণ করে নিতে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পৃথক বর্ধিত সভা করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ৮ ফুট উচ্চতার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৮ ফুট প্রস্থের মঞ্চটি নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ জনের বসার ধারণক্ষমতা থাকলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পদধারী নেতা ও জনপ্রতিনিধি মিলে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঢাকার কলরেডি থেকে আসা ২০০ মাইক জনসভাস্থলের আশপাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ এক লাখ লোক সমাগমের ঘোষণা দিয়েছে। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিলেও প্রতি উপজেলা থেকে অন্তত ১০ হাজার করে নেতাকর্মীকে জনসভায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। এর বাইরে মূল জমায়েত করবে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।

নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি বলেন, এ জনসভা সফল করতে আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির সভা, বর্ধিত সভা করে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি। নগরের প্রতিটি সাংগঠনিক ওয়ার্ড, থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আমরা জনসমুদ্রে পরিণত করব। এ নিয়ে নগর, দক্ষিণ ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয় সভা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের সার্বিক খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নে দেশবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বিভাগকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন। আর এ কৃতজ্ঞতা থেকেই দলীয় সভানেত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা সর্বোচ্চটুকু করছি। আশা করছি, জনসভায় ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটতে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। যা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিকনির্দেশনা দেবেন তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব। যা আমাদের দলকে সুসংগঠিত করা এবং আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পরিকল্পনা,সমাগম,নৌকা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত