ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করায় বাংলাদেশ শিক্ষায় এগিয়ে চলছে : শিক্ষামন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করায় বাংলাদেশ শিক্ষায় এগিয়ে চলছে : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষায় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে চলবার চেষ্টা করছি। বঙ্গবন্ধু শুধু ১৯৭০ সালের প্রাক নির্বাচনের ভাষনেই নয়, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সেখানেও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে কতগুলো দিক নির্দেশনা দেয়া ছিল, সেগুলোকে ১৯৫৪ সালের যুক্ত ফ্রন্টের নির্বাচনে আমরা দেখেছি। আমরা ছয় দফার মধ্যে সরাসরি শিক্ষা না দেখলেও কিন্তু এর যে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ছিল সেখানে শিক্ষার কথা বলাছিল। আর ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু তার নির্বাচনী ভাষণে শিক্ষার কথা ব্যাপকভাবে বলেছেন।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ঢাবিয়ান চাঁদপুরের আয়োজনে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ এবং জিডিপির ৪ বাগ সেখানে বিনিয়োগ করা দরকার। যখন আমরা সারা বিশে^ শুনি শিক্ষায় জিডিপি কতভাগ বিনিয়োগ। এর মানে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যে বুঝা যাচ্ছে তিনি সময়ের চাইতে কতখানি এগিয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশটিকে শিক্ষাকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছিলেন এবং তিনি কুদরত-ই খোদা শিক্ষা কমিশন তৈরী করেছিলেন। সেই কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছিল, সেটি ছিল অনেক সমৃদ্ধ। সেটি যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারতাম আজকে আমরা শিক্ষায় বিশে^ অনেক বেশী এগিয়ে থাকতাম। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর অন্য সব ক্ষেত্রে যেমন আমরা পিছিয়েছি, শিক্ষাও তেমনি পিছিয়েছি।

দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে যারা তখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, তারা কিন্তু এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ^াস করেনি। কাজেই তারা এদেশের মানুষকে এগিয়ে নিবে এই চিন্তা তাদের মাথায় ছিল না। যে কারণে তারা গতানুগতিক শিক্ষাকে চালিয়ে নিয়েছে, চালু ছিল এবং চালু থাকত যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা দায়িত্বে না আসতেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শিক্ষায় একটি বড় ধরণের পরিবর্তন আনবার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিশ^বিদ্যালয় ও স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষাকে উৎসাহিত করেছেন। এরপর তিনি বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষার দিকে নজর দিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দ্বিতীয় মেয়াদে যখন ক্ষমতায় এসেছেন, সেই সময় তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি ছিল তরুন প্রজেন্মর জন্য ঘোষণা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমরা দিন বদলের সনদ দিচ্ছি, এটি আমাদের তরুন প্রজন্মের জন্য। বদলে যাওয়া দিনের কান্ডারী হবে তরুন প্রজন্ম এবং তারাই এর সুফলভোগী হবে। তারা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হবে।

তিনি বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবতা। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অধীর আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি এবং সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বার জন্য কাজ করে চলেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের ৪টি স্তম্ভ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। আর এর কেন্দ্র হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। সেই স্মার্ট নাগরিক হতে হলে শিক্ষার দিকে অর্থাৎ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও মনোভাব নিয়ে তৈরী হতে হবে তার সবকিছু আমরা আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে নিয়ে এসেছি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের সন্তানরা ভাল পড়ালেখা করবে এবং জ্ঞানের সাথে দক্ষতা অর্জন করবে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হবে। তারা মূল্যবোধকে তাদের জীবন চর্চার অংশ করে নিবে। আর যে দক্ষতাগুলো বর্তমান বিশে^ আছে এবং আসছে সেগুলোর জন্য তৈরী হবে। যেগুলোকে আমরা বলছি সফ্ট স্কীল। সবকিছু মিলিয়ে তারা যেন দক্ষ, যোগ্য, মানবিক ও সৃজনশীল মানুষ হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

দীপু মনি বলেন, শিক্ষাক্রমে যে পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে এবং গুজব রটানো হচ্ছে। যারা কোচিং ও গাইড বই বিক্রি করছেন তারাও এর সাথে যুক্ত রয়েছেন। তারা এই ব্যবসা না করে অন্য ব্যবসা করতে পারবেন। তাদের কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু আমাদের এই শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন বিষয়ে অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। তাদের সন্তানদেরকে এখন আর গাইড বই কিনে দেয়া লাগবে না। তারা প্রাইভেট পড়তে হবে না। তারা আনন্দের মধ্যে শিখবে। আমি সারাদেশের শিক্ষকদের সাথে কথা বলছি। তারা এই শিক্ষাক্রমের বাস্তবচিত্র আমার কাছে তুলে ধরছে। তারা বলছেন শিক্ষার্থীরা খুবই আগ্রহী এই শিক্ষাক্রমে।

ঢাবিয়ান চাঁদপুরের আহবায়ক ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক আলমগীর হোসেন বাহারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটারের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, দৈনিক ঢাকার ডাক পত্রিকার সম্পাদক এবিএম শামছুল হাসান হিরু।

অনুষ্ঠানে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে চাঁদপুর জেলা থেকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

ঢাবিয়ান চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও সুধীজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষামন্ত্রী,শিক্ষা,অনুসরণ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত