ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মো. সোহেল রানা (২৫) নামে এক যুবককে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যার পর তার লাশ ফেলে যায় নদীর পাড়ে। আজ (২৮ অক্টোবর) শনিবার সকালে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কুর্শিপাড়া এলাকায় কাঁচামাটিয়া নদীর পাড় থেকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার চাল বাজারে ফ্লেক্সিলোডের দোকান রয়েছে সোহেলের। তার বাড়ি উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কুমড়াশাসন গ্রামে। সে ওই এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে। বছরখানেক আগে সোহেল সঙ্গে বিয়ে হয় পৌর এলকার মো. আবু তাহের এর মেয়ে মোসা. মৌসুমি আক্তার (২২) এর। বিয়ের পর থেকে বেশিরভাগ সময় শ্বশুড় বাড়িতেই থাকতেন সোহেল। এ অবস্থায় গতকাল সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে বলে আসেন রাতে সেখানেই যাবে।
এরপর শনিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭ টার দিকে স্থানীয় লোকজন কাঁচামাটিয়া নদীতে মাছ ধরতে গেলে নদীর পাড়ে একটি ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আঠারবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, নদীর পাড়ে এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ পড়ে আছে এমন খবরে তাঁরা দ্রুত সেখানে যান। পড়ে থাকা লাশের থেকে একটু দূরে হত্যায় ব্যবহৃত একটি দা উদ্ধার করেন তাঁরা। দা দিয়ে কুপানোয় মারাত্মক জখমের চিহ্নও দেখা যায় যুবকের শরীরের বিভিন্ন অংশে এবং ঘারে। এছাড়াও নিহত যুবকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও একটি মানিব্যাগ আলামত হিসেবে পাওয়া যায়। এদিকে লাশ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের চাচা সিদ্দিকুর রহমান পুলিশকে নিশ্চিত করেন এটি তাঁর ভাতিজা।
নিহতের স্ত্রী মোসা. মৌসুমি আক্তার (২২) জানান, তাঁর মা অসুস্থ থাকার কারণে একমাস যাবৎ সে বাবার বাড়িতেই থাকেন। তাঁর স্বামী সোহেলেও তাঁদের বাড়িতেই বেশিরভাগ থাকেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে থাকেন। এ অবস্থায় গতকাল সকালে দোকানে আসার আগে তাঁকে বলে আসে রাতে সেখানেই যাবেন তিনি।
কিন্তু গতকাল রাতে একটু আগেবাগে ঘুমিয়ে পড়ায় সে আর তাঁকে কল দিতে পারেনি। সকালে উঠে ভাবেন হয়তো নিজের বাড়িতেই আছেন সোহেল। বিষয়টি নিশ্চিত হতে সকালে তাঁর স্বামীর নাম্বারে কল দিলে বেশ কয়েকবার রিং হলেও ফোন রিসিভ করেনি। সে ভাবে হয়তো ঘুমাচ্ছে। এ জন্য কল ধরছেনা।
তাছাড়া জানা মতে তাঁর স্বামীর সঙ্গে কারোর কোন বিরোধ ছিলোনা বলে জানান নিহতের স্ত্রী।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন- ' দুর্বৃত্তরা যুবককে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ নদীর পাড়ে ফেলে যায়। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারকরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে'।