ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুদকের মামলায় সাতক্ষীরা সিটি কলেজের তিন শিক্ষক কারাগারে

দুদকের মামলায় সাতক্ষীরা সিটি কলেজের তিন শিক্ষক কারাগারে

প্রতারণা, জালিয়াতি ও তথ্য গোপনের মাধ্যমে কনিষ্ট শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরা সিটি কলেজের ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জন শিক্ষক আত্মসমর্পন করেছে। এদের মধ্যে অসুস্থ্যতাজনিত কারণে একজনের জামিন মঞ্জুর করে অপর তিনজনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সাতক্ষীরার বিশেষ আদালতে আসামীরা আত্মসমর্পন করেন। সাতক্ষীরা বিশেষ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলীম আল রাজী শুনানী শেষে তিনজনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। তবে, এ মামলার অন্যতম আসামী সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু সাঈদ পলাতক রয়েছেন।

জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন, আশাশুনির নাকতাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ সরদারের ছেলে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এসএম আবু রায়হান, সদর উপজেলার নেবাখালি গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে দর্শণ বিভাগের প্রভাষক নাসির আহম্মেদ এবং সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ সরকারের ছেলে হিসাব বিজ্ঞানের প্রভাষক অরুন কুমার সরকার।

অসুস্থ্যতার মেডিকেল সার্টিফিকেট বিবেচনা করে আদালত জামিন দিয়েছে একই মামলার অপর আসামী দেবহাটার উত্তর পারুলিয়া গ্রামের দেলবার মৃধার ছেলে সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মনিরুল ইসলামকে।

সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে উক্ত চার প্রভাষককে পূর্ববের তারিখ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করার মাধ্যমে বেতন ভাতা বাবদ উত্তোলন পূর্বক ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সিটি কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ আবু সাঈদসহ উপরোক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক প্রবীর কুমার দাস ২০২২ সালের ৯ মার্চ খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় মামলা (৩/২০২২) দায়ের করেন। যা পরবর্তীতে সাতক্ষীরা বিশেষ আদালতে ২/২০২২ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দুদকের খুলনা অফিসের সহকারি পরিচালক বিজন কুমার রায় চলতি বছরের ৫ মে আদালতে ওই পাঁচ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ২৬ অক্টোবর দুদকের দাখিলকৃত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে রেজুলেশন জালিয়াতি করে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ ও ২১জন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৫আগস্ট সাতক্ষীরায় এসে তদন্ত শুরু করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক প্রবীর কুমার দাস। ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর সাবেক অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক ও সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুকুমার দাসের নিকট থেকে দুদক সাতক্ষীরা সিটি কলেজের দুর্নীতি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য অবগত হন। অভিযুক্ত ২১জন প্রভাষক ও অধ্যক্ষ আবু সাঈদকে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত কয়েক দফায় দুদক কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নেওয়া হয় তাদের লিখিত জবানবন্দি। পরবর্তীতে বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মনিরুল ইসলাম, দর্শণ বিভাগের প্রভাষক নাসির আহম্মেদ, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এস্এম আবু রায়হান এবং হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অরুন কুমার সরকারের কাগজপত্র জাল বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।

দুদক,সাতক্ষীরা,শিক্ষক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত